রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৫

Demands of AUEOs and Chain of Command

সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদটিকে প্রথম
শ্রেণিতে উন্নীত করা কেন প্রয়োজন?(পর্ব-০১)
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ 
  সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
  মহেশখালী, কক্সবাজার।
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এ.ইউ.ই.ও) পদটিকে কেন প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হচ্ছে না? প্রশ্নটি বিলিয়ন ডলারের।১৯৯৪ সালে এ পদটিকে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদ হিসেবে উন্নীত করা হয়।আর সরকারি কর্ম কমিশনের (পি.এস.সি)-এর মাধ্যমে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে ১৯৯৬ সাল হতে কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদান করা হয়ে আসছে।একইভাবে একই শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণপূর্বক উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদটিকে ‍১৯৯৪ সালে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড পদ ঘোষণা করে অনুরূপ পদ্ধতিতে নিয়োগ দেয়া হয়ে আসছে। ইতোপূর্বে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদটি ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির এবং সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদটি ছিল, তৃতীয় শ্রেণির। এ দু‘টি পদে কর্মরত কর্মকর্তাগণ একে অপরের পরিপূরক স্বরূপ। কিন্তু ১ম শ্রেণি ও ২য় শ্রেণি; এটুকু পার্থক্য বৈ কি! অবশ্য অনেকে, এটাকে অনেক বড় ফারাক করে দেখেন। অন্যদিকে তাঁরাও (ইউ.ই.ও-গণ) বিভিন্নভাবে পদোন্নতি ইত্যাদি নিয়ে খুবই হতাশ। আমরাও পদ মর্যাদা এবং মান নিয়ে প্রচন্ডভাবে হতাশাগ্রস্থ।উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে বর্তমানে সারা দেশে অনেক সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার চলতি দায়িত্ব এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।অর্থাৎ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নেক্সট ম্যান হলেন, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার। অথচ আমরা (এ.ইউ.ই.ও-গণ) দ্বিতীয় শ্রেণির পদ মর্যাদা ভোগ করছি।যথাসময়ে পদোন্নতিও পাই না, সুযোগ-সুবিধাও পাই না, যেনতেনভাবে পদায়ন ও বদলী করা হয়, আমাদেরকে। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে কোন কমকর্তাকে বিশেষ কাজের দায়িত্ব দেয়ার প্রয়োজন হলে, খোঁজ করা হয়, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে। কারণ, তাঁরা উচ্চ শিক্ষিত, মার্যিত, গণমুখি, দক্ষ ও কর্মতৎপর। সর্বোপরি, উপজেলা প্রশাসনে তাঁদের গুরুত্ব মোটেই কম নয়।তাঁদের সকল কাজের পারদর্শিতা বিবেচনা করে স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য মহোদয়, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়, ট্যাগ অফিসার পদে, এস.এস.সি-এইচ.এস.সি পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ডিগ্রী পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব অর্পনসহ বিবিধ জরুরী কাজে এ.ইউ.ই.ও-গণকে বেছে নেন, তাঁরা যথার্থ দক্ষ ও দায়িত্বশীল বলে।আর প্রত্যেকটি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণের  জন্য বর্তমান সরকার কতৃক গৃহীত সকল শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চতকরণের লক্ষ্যে বিশাল কর্মযজ্ঞকে সাফল্যের পানে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, মূলত: এসব কর্মকর্তা এবং শিক্ষকগণই। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ শুধু ম্যাসেজগুলো দিচ্ছেন এবং মনিটরিং, তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধন করছেন মাত্র।আবার, প্রাথমিক শিক্ষাস্তর, প্রাথমিক বিদ্যালয়, কর্মরত শিক্ষকমন্ডলীসহ অন্যান্যদের জন্য সরকার এবং দাতাগোষ্ঠী অনেক কিছু করছেন। কিন্তু, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণের দিকে তেমন কারও দরদ দেখা যাচ্ছে না।কেন আমরা অপাংতেয়, অবহেলিত হয়ে থাকব? এভাবে বৈষম্য ও অমর্যাদা করা হবে কেন, আমাদেরকে? উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের কর্মকর্তাগণ; যেনতেনভাবে নিয়োগ পেয়ে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হয়ে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেয়ে যাবেন; আর চেয়ে চেয়ে দেখব, আমরা; এটা হয় না।আবার, প্রধান শিক্ষকগণকে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেয়া হয়েছে।সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের পদ মর্যাদা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত না হওয়া, নিয়মিত পদোন্নতি না পাওয়া এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি নিশ্চিত না হওয়ায়, কর্মরত কর্মকর্তাগণের (এ.ইউ.ই.ও) মনে প্রচন্ড হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।সারাদেশে হতাশাগ্রস্থ দু‘সহস্রাধিক কর্মকর্তাকে কর্মপ্রেরণা দান, প্রেষণা প্রদান এবং আন্তরিক ও সক্রিয় দেখতে চাইলে, তথা সকল শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে পুরোপুরি এঁদের সেবা পেতে হলে, এ পদটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীতকরণ, নিয়মিত পদোন্নতির ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকপ্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনা করা এবং দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে কর্মরত থাকার অভিজ্ঞতার আলোকে নিন্মে আমার কিছু প্রস্তাবনা এবং অনুভূতি তুলে ধরছি।
১.প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে কর্মরত সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণের জন্য নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, সুযোগ-সুবিধাদি নিশ্চিতকরণসহ যাবতীয় বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের নিজস্ব বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে, শীঘ্রই। প্রস্তাবিত খসড়া নিয়োগ বিধিমালা দেখতে পাই ওয়েভসাইটে এবং এ বিষয়ে শুনছি, অনেক দিন ধরে।কিন্তু তা আলোর মুখ দেখতে পাচ্ছে না। আমাদেরকে গাধার মত খাটানো হবে, আর আমাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো বিবেচনা করা হবে না, এটি কেমন কথা?
২.সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে কর্মরত কর্মকর্তাগণসহ সমপর্যায়ে বা নীচের স্তরের পদগুলোতে যাঁরা প্রাথমিক শিক্ষার জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, তাঁদের মর্যাদা বাড়াতেই হবে, নিয়মিত পদোন্নতি দিতে হবে এবং নীতিমালা অনুযায়ি পদায়ন করতে হবে। সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণরে সাথে শুধু দুর্ব্যবহার করলে এবং তাঁদেরকে গালাগালি করে গেলে, কোন কাজ হবে না। তাঁরাও ঘুরে দাঁড়াতে বাধ্য হবে।এ পদে কর্মরত এতগুলো সম্ভাবনাময় অফিসার তিলে তিলে কষ্ট পাবে এবং একই পদে চাকুরী শুরু ও একই পদে শেষ করবে, এটা হতে পারে না। সমগ্র পৃথিবীর কোথাও নেই, এমন ব্যাবস্থা। আমলাতন্ত্র বা কোন সংগঠনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা পুরো চাকুরিকাল একই পদে থাকবে, এমন ভাবাও যায় না।বৃটিশ শাসনামল হতে ভারত উপমাহাদেশ এবং পাকিস্তান-বাংলাদেশ শাসনামলে কোন দেশে এমন ব্যবস্থা নেই, যতদূর জানি।বাংলাদেশের প্রশাসনে বা সরকারি বিভাগ/অফিসগুলোতে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের মত এত হতাশা, আর কোন বিভাগে আছে কিনা, সন্দেহ হয়।
৩.উপজেলা পর্যায়ে অন্যান্য অফিসগুলো; যেমন- কৃষি অফিস, প্রেকৌশল অফিস, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস, প্রাণি সম্পদ অফিসগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তাগণের মাঝে পদ মর্যাদা বৃদ্ধি, পদোন্নতি এবং পদায়ন নিয়ে এত হতাশা নেই। তাঁরা বরং অনেক আগেই পদ মর্যাদাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি পেয়ে গেছেন।
৪. জাতীয় শোক দিবসের এই শোকাবহ আগস্ট মাসেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদটিকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেয়ার ঘোষণা দিতে পারেন। তিনি ২০১৩ সালে ৯ই জানুয়ারি, রেজিস্টার্ড-আনরেজিস্টার্ড সব ধরণের প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কর্মরত শিক্ষকমন্ডলীকে সরকারিকরণ করে বিশাল উদার মনের পরিচয় দিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ০১/০৭/৭৩ তারিখে প্রায় ৩৮ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে এক ঘোষনায় জাতীয়করণ করে একটি স্বাধীন, শিক্ষিত ও মর্যাদা বোধসম্পন্ন জাতি গঠনের কাজ সূচনা করেছিলেন।আর, তাঁর সুযোগ্য কন্যা, ২০১৩ সালের ৯ই জানুযারি সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীযকরণের ঘোষণা প্রদান এবং এপর্যায়ে এসে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিয়েছেন, তিনিই পারেন, এ জাতিকে উন্নয়নের সোপানে উঠিয়ে দিতে। তিনি প্রধান শিক্ষকদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দিয়ে সকল শিক্ষকের জন্য উন্নীত বেতন-স্কেল ঘোষণা দিয়েছেন, যা বর্তমানে সারা দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবই করছেন, বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী জাতিকে অকুন্ঠ চিত্তে ভালবাসেন বলে এবং জাতিকে বিশ্ব দরবারে উচু মর্যাদায় সমাসীন করতে চান বলে। সীমিত সম্পদের এ দেশকে তিনি, শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নত করে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর। সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের প্রতি বিরূপ মনোভাবাপন্ন কতিপয় মানুষের  কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুনবেন কেন? তিনি সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের পদটিকে প্রথম শ্রেণি করার ঘোষনা দিন, এ শোকের মাসেই। কার্যকর হয়ে যাবে, শীঘ্রই। সব বাধা দূর করে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে প্রথম শ্রেণির পদ মর্যাদা দিয়ে দিন, মহামান্য প্রধানমন্ত্রী। আমরা আপনার জন্য যা করার সবই করব।
৫.বিশ্ববিদ্যালয় হতে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নেওয়া একদল শিক্ষিত, তরুণ ও কর্মতৎপর কর্মকর্তাকে (এ.ইউ.ইও)এভাবে  হতাশায় ডুবিয়ে রাখা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না।জাতির জন্য তো নয়ই, প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য তো মোটেই নয়।সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ, কাজ করেন দেশের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত উচ্চ শিক্ষিত, ভদ্র, জাতি গঠনের কারিগর, পবিত্র মন-মেজাজের অধিকারী একদল শিক্ষকদের নিয়ে। তাঁরা, তাঁদেরকে (শিক্ষকদেরকে) প্রশিক্ষণ দেন, শেখান, পড়ান, সহায়তা দেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কাজে সাহায্য-সহায়তা দেন। সর্বোপরি, প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কাজ শিক্ষকদের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করান, সরকারের পক্ষে। আর এ স্তরের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বা মানুষেরা সাধারণত; পড়াশোনা করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ শিক্ষকদের শিক্ষক ও প্রশিক্ষক। সে অর্থে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় শিক্ষকদের মত ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকমন্ডলী বিবিধ অনুষদ বা ফ্যাকাল্টিভুক্ত বিষয়গুলো নিয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদেরকে মৌলিক-তাত্ত্বিক ও বিশ্ব মাপের জ্ঞান বিতরণ করে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তা অর্জন করে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পেশার কর্ম জীবনে ছড়িয়ে পড়ে।আর সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত উচ্চ শিক্ষিত শত শত শিক্ষকমন্ডলীকে পেশাগত মানোন্নয়ন এবং বিষয় জ্ঞান ও পাঠদান সম্পর্কিত জ্ঞান বিতরণ করেন এবং হাতে-কলমে এসব কাজ শেখান ও নির্দেশনা-পরামর্শ দেন। বিষয়টি হয়ত, কেহ এভাবে ভেবে দেখার অবকাশ পান না। কিন্তু বাস্তবতা, তাই।সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণের মাঝে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা ক্যাডার সার্ভিস-এর প্রশাসন বিভাগ, পররাষ্ট্র দপ্তর, পুলিশ বিভাগ, ইকোনমিক ক্যাডারসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রথম শ্রেণির ক্যাডার পদে চাকুরি করার যোগ্যতা রাখেন। যোগ্যতা রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি কলেজগুলোতে অধ্যাপনা করার বা ব্যাংকের উচ্চ পদে চাকুরি করার। কিন্তু দেশে এধরণের পদগুলো খুবই সীমিত বলে তাঁরা তা পারেন নি, হয়ত। তাই বলে, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে খাটো করে দেখার অবকাশ মোটেই নেই।জাতীয় পর্যায়ে লোকপ্রশাসন সংস্কার কমিটি (নিকার), চাকুরি ও নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন বিষয়ক কিমিটি, চাকুরি বিধি-বিধান প্রণয়ন এবং আইন-কানুন তৈরি করেন, এমন উচ্চ পর্যায়ের কমিটিগুলোতে যাঁরা আছেন এবং অন্য সকল সংশ্লিষ্ট সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদনকারি কর্তৃপক্ষের নিকট; সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণের আকুল আবেদন, আপানারা আমাদের প্রথম শ্রেণি করার বিষয়টি দরদ দিয়ে ভাবুন এবং অচিরেই তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।আমাদের এ বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকায়, আমরা সর্বাত্নক আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছি।প্লিজ, আমাদের ব্যাপারটা আবার ভাবুন এবং তা কার্যকর করে দিন।
৬. সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে উপজেলা পর্যায়ে এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ অন্যান্য অফিসে কাজ করছেন যাঁরা, তাঁদের ধৈর্য্য হারালে চলবে না। অনিয়মতান্ত্রিক পথে বা শ্রমিক আন্দেলনের মত আন্দেলন করার কথা ভাবা যাবে না, আমাদেরকে। নিয়মতান্ত্রিক পথে ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগুতে হবে, সবাইকে। আমাদের দাবিগুলো সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে আমাদেরকে এবং এগুলো কার্যকর করার পদ্ধতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। জানতে হবে, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহন এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে। শুধু কাদা ছুড়াছুড়ি করে ও আজেবাজে মন্তব্য করে পরস্পরকে নিয়ে ঝগড়া করলে চলবে না, আমাদের দাবিগুলো ভেস্তে যাবে। আমার অনুরোধ, আমরা সবাই তৎপর হই এবং যে যেখানে আছি, সাংগঠনিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা এবং সংগঠিত হয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আমাদের কথাগুলো পৌঁছানোর চেষ্টা করি। হতাশ না হয়ে, অব্যাহত প্রচেষ্টা চালালে, আমরা অবশ্যই সফল হব।
পরিশেষে বলতে হয়, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে কারও অবহেলার চোখে দেখা উচিত হবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব; আমাদের প্রথম শ্রেণিতে উন্নীতকরণের বিষয়টি আন্তরিকতা দিয়ে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করুন। অন্যথায়, পুরো প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসতে পারে।আমার সহকর্মী, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে পরামর্শ দেব, আপনারা অস্থির হবেন না। নিয়মতান্ত্রিক পথে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি-দাওয়া আদায়ের কথা ভাবুন। সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সমিতি দ্রুত পূণর্গঠন করে সবাইকে পূর্ণাঙ্গ সক্রিয় কতে হবে। সবাইকে নিয়ে এগুতে হবে।অন্যপথে নয়। সবাই ভাল থাকুন।








পর্ব-০২)
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ 
  সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
  মহেশখালী, কক্সবাজার।
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের পদটিকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীতকরণ বিষয়ে লিখে সহকর্মীগণের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি।আজ লিখতে চাই, আমাদের এ মুহুর্তে করণীয় এবং নিজেদেরকে উপযুক্ত কর্মকর্তা হিসেবে প্রমাণ করার জন্য পরার্শমূলক কিছু বিষয়। বিগত ৫/৬ মাস ধরে আমি, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দেশে-বিদেশে যে সব নবতর ধ্যান-ধারণার প্রচলন ঘটেছে, যেমন- পরিমার্জিত প্রাথমিক শিক্ষাক্রম, চাকুরি বিধি-বিধান, ছুটি বিধি, চাকরি সন্তুষ্টি, শিক্ষকদের করণীয়, পাঠদান পদ্ধতি, মূল্যায়ন পদ্ধতি, মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার সম্পর্কে জানা ও এতে দক্ষ হয়ে ওঠার কলা-কৌশল আয়ত্তকরণ, শিক্ষক যোগ্যতা, শিক্ষা মনোবিজ্ঞানীগণের জীবনী ও ভাবনা প্রভৃতি বিষয়ে অনেকগুলো নিবন্ধ রচনা করেছি। আর, দেশে-বিদেশে প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের সাফল্য সংক্রান্ত বিশ্বব্যাংক, ইউনিসেফ, ও.ই.সি.ডি, জাতীয় কৃতি অভীক্ষা ইত্যাদি সংস্থার তৈরিকৃত প্রতিবেদন সআডি করে ও তথ্য ব্যবহার বেশ কিছু লেখা তৈরি করেছি, যা আমার ফেসবুক টাইমলাইন হতে আমার সহকর্মীগণ পড়ে দেখতে পারেন।তাছাড়া, প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত লেখালেখি নিয়ে আমর নিজস্ব একটি ব্লগ রয়েছে। ব্লগটির ঠিকানা Upazilaeducationoffice.blogspot.com।ব্লগটির নাম; `Primary education Country to Country”।আমার লেখাগুলো তাতে একসাথে পাওয়া যাবে।যাহোক, আমার তরুণ সহকর্মী এবং সিনিয়ার সহকর্মী, যাঁরা অতিরিক্ত প্রত্যাশা করেন এবং বিভিন্নভাবে সমালোচিত; সবার কথা বিবেচনা করে বর্তমান নিবন্ধটি রচনা করছি। অনেকের হয়ত, এসব ভাল লাগবে না। সদ্য  ঘোষিত মধ্য আয়ের দেশ এবং সীমিত সম্পদের আমাদের এ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে এবং জাতিকে শক্তিশালী ও মর্যাদাকর অবস্থানে পৌঁছে দিতে হলে, সবাইকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, আমাদের।আমরা সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণও এর বাইরে নয়। নিখাদ দেশপ্রেম এবং জাতির জন্য কিছু করার মানসিকতা নিয়ে যদি আমারা আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্যসমূহ নিষ্ঠার সাথে পালন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হই, তবে আমাদের প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার স্বপ্নসহ সব কিছু পাব, ইনশাহ আল্লাহ।নিচে আমাদের করণীয় কিছু দিক তুলে ধরছি।
১. প্রাথমিক স্তরে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সরকার কতৃক গৃহীত সকল পদক্ষেপ আমাদেরকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে ও সক্রিয় হয়ে বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। এধরণের কর্মসূচিগুলো হলো; বছরের প্রথম দিনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্য বই তুলে দেয়া, বিদ্যালয় ক্যাচমেন্ট এলাকার ১০০ ভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো, বিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীদেরকে নিয়মিত বিদ্যালয় গমনাগমন করানো, শ্রেণিকক্ষগুলোতে মানসম্মত পাঠদান, মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে পাঠদানের বিষয়টি নিশ্চিতকরণ, ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তব রূপ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রতিফলন ঘটানো, কর্মরত শিক্ষকদেরকে যথার্থ মানসম্মত পাঠদানে পেশাগতভাবে দক্ষ এবং যোগ্য হয়ে ওঠতে সহায়তা করা, উপবৃত্তি বিতরণ কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পাদন, জাতীয় শোক দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলো যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টূর্ণামেন্ট সফলভাবে সম্পন্নকরণ, আন্তপ্রাথমিক বিদ্যালয ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম জোরদারকরণ, প্রতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা সফলভাবে সমাপন প্রভৃতি।
২. দেশের প্রত্যেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে গাইবান্ধ্যার শিবরাম, বগুড়ার মোকামতলা, যশোরের কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মত সফল ও ভাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিণত করার জন্য আসুন, আমরা সবাই সর্বাত্নক কাজ করে যাই।বিদ্যালয় পরিদর্শন, মনিটরিং, তত্ত্বাবধান এবং শিক্ষকদেরকে নির্দেশনা দান, সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রদান, পরামর্শ প্রদান প্রভৃতি কাজগুলোতে পূর্ণ আন্তরিক হই, আমরা।
৩. আমাদের সবার ধ্যান-জ্ঞান হওয়া উচিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে সফল করা এবং প্রত্যেক শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা।
৪. যতটা পারা যায়, আমাদেরকে দুর্নাম, বদনাম এবং শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চালানো হয়, তা হতে মুক্ত থাকতে হবে।
৫. ব্যক্তিগতভাবে আমাদেরকে সৎ, স্বচ্ছ, দুর্নীনীতিমুক্ত, দেশপ্রেমিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ, সেবা পরায়ণ এবং কর্মঠ হতে হবে।
৬. জনমানুষের নিকট এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট নিজেদের পরিচিতি বা ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বলতর করে তুলতে হবে।
৭. উপজেলায় কর্মরত আমাদের মত উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন অন্যান্য কর্মকর্তাগণের সাথে সব কাজে পারদর্শী এবং প্রতিদ্বন্দ্বি মনোভাবাপন্ন হতে হবে, আমাদেরকে।
৮. স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় অভিজাত শ্রেণির নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সুনাম ও সম্মানজনক একটা অবস্থান তৈরি করে নিতে হবে, এ.ইউ.ই.ও-গণকে এবং সবার সাথে একটি সুন্দর ও চমৎকার যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
৯. উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ইউ.আর.সি ইন্স্ট্রাক্টর, এস.এম.সি সভাপতি ও সদস্যবৃন্দ, প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষকমন্ডলী, অভিভাবক, শিক্ষার্থী; সবাই আপনাকে ভাল জানবেন এবং তাদের সাথে সুসমন্বয় ও সুসম্পর্ক থাকবে, আমাদের।
১০. সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ যেহেতু গ্রাম-গঞ্জে কাজ করেন, তাই গণবিচ্ছিন্ন এবং অতি স্মার্ট ভাব নিয়ে কাজ করতে গেলে পদে পদে সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে।কারণ, গ্রামাঞ্চলের সচেতন মানুষজন এবং বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত শিক্ষকমন্ডলীকে বোকা মনে করার কোন কারণ নেই। তারা এখন যথেষ্ট সজাগ এবং সতর্ক। আমাদের উচিত তাদেরকে সম্মান করা।আর তারাও সম্মান দিতে বাধ্য।
১১. জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সাথে আমাদের সম্পর্ক কোনভাবেই বৈরি হবে না। সরকারি চাকুরিতে উর্ধ্বতন এবং অধ:স্থনের মাঝে যে ধরণের সম্পর্ক থাকার কথা তা যথার্থই থাকবে ও হবে।
১২. উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে আমাদের ক্লাস্টারভুক্ত সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাবতীয় সব তথ্য এবং অন্যান্য কাজে সর্বাত্নক সহায়তা দিয়ে যাব, আমরা।তাঁরাও আমাদেরকে যথাযোগ্য মূল্যায়ন করবেন এবং স্নেহ করবেন, এটাই কাম্য।
১৩. সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের উচিত হবে, চাকুরি বিধি-বিধান ভালভাবে জানা, বিভাগীয় আইন-কানুন, প্রজ্ঞাপন, পরিপত্র, চিঠিপত্র, নির্দেশনা, আদেশনামাসহ সকল বিষয় আয়ত্ত করে নেয়া এবং পেশাগত উৎকর্ষতা লাভ করা।
১৪. প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক সকল বিষয় ভালভাবে জানতে হবে এবং আর্থিক বিষয়াদির বিধি-বিধানগুলোও আত্নস্থ করে নিতে হবে।
১৫. উপজেলা শিক্ষা অফিসারে দায়িত্ব নেয়ার জন্য এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য নিজেদেরকে পুরোপুরি প্রস্তুত করে তুলতে হবে।
১৬. নতুন যাঁরা সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে চাকুরিতে এসেছেন, তাঁদের কোন মতেই উচিত হবে না পুরনোদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং অবহেলার চোখে দেখা। তাঁদের অনেক ত্যাগ-তীতিক্ষার কারণেই আমরা আজকের অবস্থানে পৌঁছেছি।তাঁরা যে রকমই হোন না কেন তাঁরা চাকুরিতে আমাদের আগে এসেছেন।কথাটা লিখলাম এ কারণে যে, নতুনদের মধ্যে কেহ কেহ দেখি অতি উচ্চাভিলাস পোষণ করেন এবং পুরনোদের পাত্তা দিতে চান না।
১৭. প্রশাসনিক পূণর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার), প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন বিভাগের ও স্তরের সরকারি কর্মকর্তাগণের পদমর্যাদা বৃদ্ধিকরণ, পদোন্নতি, পদায়ন এবং অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে যেসব যাঁরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, নীতিমালা প্রণয়ন করেন এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট; আমাদের সমিতির নেতৃবৃন্দসহ সকল সদস্যের উচিত তাঁদের কাজগুলো ভালভাবে বুঝে নেয়া এবং তাঁদের সাথে কীভাবে যোগাযোগ ও বোঝা-পড়া করা যায়, তার উপায় খুঁজে বের করা।
১৮. কোন পদকে আপগ্রেডেশনের কাজটি মূলত করে থাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর খসড়া প্রস্তাবনা পাঠিয়ে থাকেন।সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হলে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুনজরে আনতে পারলেই সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদটিকে দ্রুত প্রথম শ্রেণিতে উন্নীতকরণ সম্ভব হবে। আমাদেরকে সেভাবেই এগুতে হবে। ঢাকায় বা আশে-পাশের জেলা-উপজেলাগুলোতে  যাঁরা কর্মরত আছেন, তাঁদেরকেই এসবের দায়িত্ব দেয়া প্রয়োজন বোধ করি। সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কর্মকর্তাদের দ্বারা তা অসম্ভব প্রায়। সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সমিতির নেতৃত্বে এমন লোকজনকেই নিয়ে আসতে হবে।
১৮. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়, পরিচালক মহোদয়গণ, উপ-পরিচালক মহোদয়গণসহ উর্ধ্বতন সকল কর্মকর্তার নিকট মাঠপর্যায়ের সর্ব নিম্নস্তরে কর্মরত কর্মকর্তা হিসেবে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে তাঁদের আস্থাভাজন, যোগ্য, দক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য বলে প্রমাণ করে দিতে হবে। আর, তাঁদের সাথে একটি চমৎকার ও কার্যকর যোগাযোগের সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।
১৯. প্রাথমিক শিক্ষা খাতের উন্নয়ন এবং মানসম্মত শিক্ষার প্রসারে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সরকারের গৃহীত বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত রূপকল্পভুক্ত বিষয়।আর এ দু‘টি খাতকে সাফল্যের মুখ দেখানোর ক্ষেত্রে ও প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন কার্যক্রমে এখানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারি-শিক্ষকমন্ডলীই সরকারকে সার্বিক সহায়তা করে যাচ্ছেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই আমাদেরকে বিমুখ করবেন না। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
২০. সরকারের হাতকে শক্তিশালী করে জাতি গঠন এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমরা সর্বাত্নক আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং যাব।সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ সকলেই এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উপসংহারে বলতে চাই, আমরা সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য যথার্থভাবে পালন করে যাব।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা, মাননীয় মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবর্গ, মাননীয় সংসদ সদস্যগণ এবং সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ আমাদের প্রতি সদয় হবেন এবং অচিরেই সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদটিকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেবেন, এটাই আমাদের মনের আকাংখা।আমাদের প্রত্যাশাটি আপনারা পূরণ করে দেয়ার পদক্ষেপ নিন, আমরা একটি শিক্ষিত ও আলোকিত প্রজন্ম জাতিকে উপহার দেব।এটাই হোক সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের আজকের শপথ।


























চেইন অব কমান্ড নীতি মেনে চলা এবং
এ.ইউ.ইও-প্রধান শিক্ষক-সহকারি শিক্ষক
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ 
  সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
  মহেশখালী, কক্সবাজার।
সরকারি-বেসরকারি সংগঠন বা অফিসগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যকার উর্ধ্বতন-অধস্তন সম্পর্কের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।লোকপ্রশাসনের ভাষায় এটাকে বলা হয়; পদসোপানিক পদ্ধতি। প্রচলিত কথায় বলা হয়, ‘চেইন অব কমান্ড’। উর্ধ্বতন-অধস্তন কর্মচারির মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্য; একটি আদেশ-শৃংখলা বা চেইন অব কমান্ড দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে।কর্মের দায়িত্ববোধ এবং পদ; কর্তৃত্বই উর্ধ্বতন-অধস্তন কর্মচারির সম্পর্ক নির্ধারণ করে দেয়। উর্ধ্বতন কর্মকর্তা; অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারিকে আদেশ প্রদান করেন এবং তাঁর কাজ তদারক করেন। সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেক বিভাগ বা সংগঠনে এরূপ একটি ক্ষমতা ও দায়িত্বের রেখা থাকে এবং এ রেখা কার্যনির্বাহী থেকে শুরু করে নিম্নতম কর্মচারি পর্যন্ত একটি কার্যকর সংযোগ রক্ষা করে চলে। সাধারণত বলা হয়, ‘বস ইজ অলওয়েজ রাইট।’ অর্থাৎ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা যা বলেন, তাই করতে হবে। সেনা বাহিনী বা নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগে এ নীতি অনেকটা হুবহু মেনে চলা হয়।যাহোক, আমার বর্তমান নিবন্ধটির বিষয় হলো, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-প্রধান শিক্ষক-সহকারি শিক্ষকমন্ডলীর মধ্যকার ‘আদেশের ঐক্য বা চেইন অব কমান্ড।’ বিশেষত; সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি শিক্ষকদের মাঝে এ নীতিটি প্রয়োগের রূপরেখা কেমন হওয়া উচিত; তা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে, এনিবন্ধে। সরকারি-বেসরকারিসহ অন্যান্য সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে চেইন অব কমান্ড পদ্ধতিটি যেভাবে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে, সেটি প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে তা ভিন্নধর্মী হতে বাধ্য।কারণ, এটি কর্মকর্তা-প্রধান-শিক্ষক-সহকারি শিক্ষকদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্র এবং তাঁদের মধ্যকার সম্পর্ক বিবেচনায় খুব সতর্কতার সাথে ও যত্নসহকারে প্রয়োগ করা প্রয়োজন হবে। এখানে কর্মরত ব্যাক্তিবর্গ সবাই উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন অথবা ন্যুনতম স্নাতক ডিগ্রী পাশ। আর মহিলা শিক্ষকগণ অনুন্য এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পাশ।শিক্ষকদের কেহ কেহ শিক্ষাগত যোগ্যতা, জ্ঞান ও মেধার বিবেচনায় অধস্তন হলেও, অধিক যোগ্য ও দক্ষ হতে পারেন। মূলত: এ জায়গায় সমস্যা হচ্ছে এ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে।অধিকন্তু, আঞ্চলিকতার মনোবৃত্তি শিক্ষকদের মাঝে প্রবলভাবে কাজ করে বলে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে উক্ত তিন স্তরের কমকর্তা এবং শিক্ষেকদের মাঝে মারাত্নক ভারসাম্যহীনতা ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সাম্প্রতিককালে তীব্র আকার ধারণ করেছে।প্রধান শিক্ষকগণ, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে ক্ষেত্র বিশেষে অমান্য করা এবং দুর্ব্যবহার করার প্রবণতা দেখাচ্ছেন। আবার, সহকারি শিক্ষকগণ, প্রধান শিক্ষকগণকে মোটেই সম্মান প্রদর্শণ না করে ও না মানার প্রবণতা দেখাচ্ছেন। বিষয়গুলো দিন দিন এত তীব্র আকার ধারণ করছে যে, এটা চলতে থাকলে, পুরো প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন এবং প্রাথমিক শিক্ষা খাতে বাস্তবায়নাধীন বিশাল কর্মযজ্ঞে স্থবিরতা নেমে আসতে পারে; যে কোন সময়। কর্মকর্তাগণ কুশলী হয়ে ব্যবস্থা করে (ট্যাক্টফুলি ম্যানেজ) যাচ্ছেন বলে, এখনও পরিস্থিতি অতটা খারাপের দিকে যায়নি। তবে চলে যেতে পারে, এভাবে চললে।উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ, নিত্যই তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে গিয়ে এ ধরণের নানা উৎপাত মোকাবেলা করে যাচ্ছেন। নিবনইটকে সাজানো হয়েছে; প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনে ‘আদেশের ঐক্য’ নীতির আলোকে বর্তমানে সারাদেশে দৃশ্যমান সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি শিক্ষকগণের মধ্যকার মিথস্ক্রিযার ধরণ ও সম্পর্ক নিয়ে। ইতোপূর্বে, আমার আরেকটি লেখায় সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং কর্মরত শিক্ষকমন্ডলীর মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। আগ্রহী পাঠকগণ, দু‘টি নিবন্ধ একসাথে মিলিয়ে পাঠ করতে পারেন। এ নিবন্ধে কিছুটা তাত্ত্বিক দিক তুলে ধরা হবে।

সংগঠন কী?
দেশের প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সংগঠন অপরিহার্য। সংগঠন থেকেই প্রশাসনের শুরু। গোষ্ঠীগত কাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সংগঠন। সংগঠন বলতে একটি যুক্তিসঙ্গত, সুপরিকল্পিত বর্তৃত্ত্ব-কাঠামোকে বুঝায়।এই কর্তৃত্ব-আদেশাধীন কাজটি কী তা সুস্পষ্ঠভাবে বর্ণনা করা এবং কাজটি বিভিন্ন অংশে সংঘটিত করা হয়।সংগঠন এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে কম বা অধিক সংখ্যক লোক বিভিন্ন কার্য সম্পাদনে নিয়োজিত থাকেন।সংগঠনের কতগুলো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে। যেমন-
১.সংগঠনের একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে।
২.এর উদ্দেশ্য যুক্তি ও ন্যায়সঙ্গত।
৩. সুষ্ঠু যোগাযোগ ও পারস্পরিক সহযোগিতা।
৪. সংগঠনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকে।
৫. সংগঠনের উদ্দেশ্য ও কর্মপদ্ধতি জটিল, এবং
৬. সংগঠন সার্বজনীন।
সংগঠনের উদ্দেশ্যসমূহ:
১. আইনানুগ উদ্দেশ্য, ২. সামাজিক উদ্দেশ্য, ৩. কার্যগত উদ্দেশ্য, ৪. সমাজতাত্ত্বিক উদ্দেশ্য, ৫. রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য, ৬. সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, ৭. মানবিক উদ্দেশ্য, এবং ৮. কর্মচারি প্রশিক্ষণ।
সংগঠনের প্রভাব সুস্টিকারি উপাদানসমূহ:
১. রাজনৈতিক উপাদান, ২. প্রয়োগিক উপাদান, ও ৩. ব্যক্তিগত উপাদান,
সংগঠনের নীতিসমূহ:
১. বিশেষজ্ঞতা, ২. শ্রম বা কর্ম বন্টন, ৩. পদসোপান, ৪. নিয়ন্ত্রণ ক্ষেত্র, ৫. সংযুক্তিকরণ বনাব বিযুক্তিকরণ, ৬. কেন্দ্রিকরণ বনাব বিকেন্দ্রীকরণ, ৭. যোগাযোগ ব্যবস্থা, ৮. নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় এবং ৯. কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব।
সংগঠনের সমস্যাসমূহ:
১. যথার্থ পরিকল্পনার অভাব, ২. সম্পর্ক নির্ণয়ে অস্পষ্টতা, ৩. ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অনীহা, ৪. ক্ষমতা হস্তান্তরে অসামঞ্জস্য বিধানে অপারগতা, ৫. দায়িত্বহীনতা, ৫. কর্তৃত্ববিহীন দায়িত্ব, ৭. সংগঠনে উপদেষ্টা বা বিশেষজ্ঞদের সেবা নিশ্চিতকরণে অসতর্কতা, ৮. কার্যগত কর্তৃত্বের অপব্যবহার, ৯. একাধিক অধীনতা, এবং ১০. অতিরিক্ত সংগঠন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, বিভাগীয় উপপরিচলক মহোদয়গণের অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং ক্লাস্টারগুলো; বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় নিজস্ব বিভাগীয় সংগঠন ও সাংগঠনিক কাঠামো।এছাড়া আছে ন্যাপ, পি.টি.আই এবং ইউ.আর.সি-গুলো এসব সংগঠনে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি, প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক সকলের কার কী দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়; সবকিছু সুনির্দিষ্ঠ করা আছে। আমারা সেভাবে যাঁর যাঁর কাজ করে যাচ্ছি। আবার, সাফল্যও আসছে।১০০ ভাগ সাফল্য এবিভাগে পেতে হলে, এখানকার সমস্যাগুলো নিবীডভাবে চিহ্নিত করে আশু সমাধান করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। বিশেষত: সংগঠনের যেসব সমস্যাবলি উপরে উল্ল্খে করা হয়েছে, অনেকটা তার সবগুলোই বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে বিরাজমান। আর, মাঠ পর্যায়ে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি শিক্ষকদের মাঝে প্রকটভাবে দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে, সমস্যাগুলো।(সহায়তা সূত্র-আধুনিক লোকপ্রশাসন; এম.শামসুর রহমান)

চেইন অব কমান্ড মেনে চলার সুবিধাসমূহ:
১. উর্ধ্বতন-অধস্তনের মাঝে সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়।
২. কর্তৃত্ব, দায়িত্ববোধ এবং জবাবদিহিতা সুস্পষ্ট হয়।
৩. কাজের পুণরাবৃত্তি  জাল-জালিয়াতি পরিহার করা যায়।
৪. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।
৫. ভাল, কার্যকর এবং কার্যকর শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা যায়।
৬. সুসমন্বয় ঘটানো যায় এবং দলীয় চেতনা প্রবলতর হয়।
৭. কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাঝে নৈতিকতা শক্তিশালী হয় ও দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হয়।
৮. কাজের মান ও ফলাফল সর্বোত্তম হয়।

কর্মক্ষেত্রে সম্মান পাওয়া যায় যেভাবে:
১.নিজের অবস্থান ভালভাবে জেনে নেয়া।
২.নিজেকে মূল্য দেয়া।
৩.বসের সাথে সরাসরি কথা বলা।
৪.সহকর্মীদের সাথে নিয়ে চলা।
৫.প্রতিযোগিতা করা থেকে বিরত থাকা। এবং
৬. ‘না’ বলতে শেখা।

বিদ্যমান পরিস্থিতি (এ,ইউ.ইও এবং শিক্ষকমন্ডলী):
প্রধান শিক্ষকগণ দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা পাওয়ার পর কেহ কেহ ভাবছেন; সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, তাঁরাও তাই!কিন্তু বিষয়টি অত সহজ সমীকরণযোগ্য মো্টেই নয়। সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ দ্বিতীয় মর্যাদাপ্রাপ্ত বটে, কিন্তু তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশন কতৃক লিখিত-মৌখিক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেছেন। আর, প্রধান শিক্ষকগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বধান্যতায় বিশেষ ঘোষণায় একটি বিশেষ স্কেলে শান্তনা পুরস্কার হিসেবে দ্বিতীয় শ্রেণি হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁরা সাধারণ স্নাতক পাশ ও অনেকে আবার এইচ.এস.সি; সি-ইন-এড পাশ। আর প্রধান শিক্ষকগণ কীভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, সে কথা না হয় লেখলাম না। সিলেট ও মোরলগঞ্জে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণের যে ধরণের আচরণ করা হয়েছে; তা সত্যিই দু:খজনক এবং কোন মতেই তা মানা যায় না।সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
২. প্রধান শিক্ষকগণ একটি নির্দিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান, নেতা ও ব্যবস্থাপক। তাঁদের কাজ নিজ নিজ বিদ্যালয় পরিচালনা করা। তাঁরা চাকুরি করেন, নিজ নিজ এলাকায়।আর, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ, তাঁর দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্লাস্টারের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রধান শিক্ষকবৃন্দ, সহকারি শিক্ষকগণ এবং শিক্ষার্থীদে পড়াশোনাসহ যাবতীয় বিষয়ে কাজ করেন এবং তিনি উপজেলার কর্মকর্তা। তাছাড়া, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ সারাদেশের যে কোন উপজেলায় পদায়িত হন এবং দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের অধীক্ষেত্র সারাদেশের যে কোন উপজেলা বা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনস্থ যে কোন অফিস। তাঁরা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদে চলতি দায়িত্ব এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
৩. কিছু কিছু প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক এবং তাঁদের সমিতির নেতৃস্থানীয় কিছু শিক্ষক স্থানীয় অধিবাসী এবং আঞ্চলিকতার প্রভাব দেখাতে অভ্যস্থ।এ দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁরা সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালান, তাঁদেরকে অসহযোগিতা করতে চেষ্টা করেন। আর, তাঁরা কখন অন্যত্র বদলী িহয়ে চলে যাবেন সেজন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কথায় কথায় চলে যাওয়ার কথা বলেন, বদলী হয়ে চলে যাচ্ছেন এমন অনেক উড়ো খবর ছড়িয়ে দেন; কিছু সংখ্যক শিক্ষক। সুযোগ পেলে, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি করান, বাজে লোক লেলিয়ে দিয়ে। শিক্ষকমন্ডলীর এ ধরণের মনোভাব এবং আচরণ মোটেই গ্রহনযোগ্য নয়।
৪. সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ, তাঁদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেন; নির্ধারিত জব ডেস্ক্রিপশন অনুসারে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সরকারি আদেশ-নির্দেশের আলোকে। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত প্রধান শিক্ষকগণ এবং সহকারি শিক্ষকমন্ডলী; এসব না জেনে ও না বুঝে মনগড়া কথা-বার্তা বলেন। অধিকাংশ শিক্ষক অবশ্য নিরীহ ও অনুগত। তাঁরা কর্তৃপক্ষীয় ও সরকারি আদেশ-নির্দেশ মেনে চলতে অভ্যস্থ।
৫.  সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের অধিক্ষেত্রের আর্থিক দায়-দায়িত্ব পালনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হলেও, তাঁরা অবশ্যেই এর অংশ। কারণ তাঁদের স্বাক্ষর ও সুপারিশেই সকল শিক্ষক বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি পান। সুতরাং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত শিক্ষকমন্ডলীর এমন ভাবা ঠিক হবে না যে, এ.ইউ.ইও-গণ তাঁদেরকে কিছু করতে পারবেন না।


প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকমন্ডলী:
১. প্রধান শিক্ষকগণ, দ্বিতীয় শ্রেণির মযাদা পেয়েছেন এবং উন্নীত স্কেলে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন বা পাবেন; এতে সহকারি শিক্ষকগণ খুবই বঞ্চিতবোধ করছেন। প্রধান শিক্ষকগণও কিছুটা তাঁদের সহকর্মীদের সাথে রূঢ় আচার-আচরণ করতে শুরু করেছেন। মূলত এখানেই দু‘পক্ষের মধ্যে তিক্ততা ও দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটেছে।
২. প্রধান শিক্ষকগণ, দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা পেয়েছেন, এটাকে বড় করে দেখাতে গিয়ে ও সহকারি শিক্ষকগণকে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে চাপ সৃস্টির প্রবণতা; হয়ত দু‘পক্ষের মধ্যকার দেশব্যাপী বিরাজমান পরিস্থিতিকে উসকে দিচ্ছে।
৩. প্রধান শিক্ষকবৃন্দ ও সহকারি শিক্ষকমন্ডলীর দায়িত্ব-কর্তব্য সুনির্দিষ্ট আছে এবং সুসমন্বয়ের মাধ্যমে তাঁরা সব কাজ করবেন, এটাই কাম্য।
৪. সহকারি শিক্ষকগণ, তাঁদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে না এনে ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন না করে প্রধান শিক্ষকগণের বিরুদ্ধে বিরূপ প্রচারনা চালাচ্ছেন। এতে দু‘পক্ষই বিরোধে জড়িয়ে পড়ছে।
উপরোক্ত পরিস্থিতিতে মহেশখালী উপজেলায় কর্মরত একজন প্রধান শিক্ষকের মতামত: মহেশখালী উপজেলার পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ শাহ জাহান লিখেন; “একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নির্ভর করে সে দেশের নাগরিকরা কতটা শিক্ষায়-দীক্ষায় অগ্রসর তার ওপর।জাতীয় লক্ষ্য হচ্ছে, ‘সকল শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা।’ শিক্ষার মূল ভিত্তি হলো, প্রাথমিক শিক্ষা।মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে, দরকার মানসম্মত শিক্ষক এবং দক্ষ ও দায়িত্বশীল প্রশাসক। শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষা প্রশাসকগণকে সর্বাগ্রে হতে হবে; দেশপ্রেমিক ও মানবপ্রেমিক। অতপর থাকতে হবে, শিক্ষক-প্রশাসকের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক।মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষকগণ হলেন; প্রধান চালিকা শক্তি।চালিকা শক্তি নামক এ বাহনের ইঞ্জিন হলো, প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হলেন, প্রকৌশলী স্বরূপ। এ ৩ জনের মধ্যে সম্পর্ক যত দৃঢ় হবে, মানসম্মত শিক্ষা তত ত্বরান্বিত হবে। আমার অভিজ্ঞতা হলো, চাপ সৃষ্টি করে যা হয় না, উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হয়। একজন আন্তরিক, সৎ, বন্ধুভাবাপন্ন সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং প্রধান শিক্ষক ও একদল সহকারি শিক্ষককে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে। এ ৩ জনের সম্পর্ক যত দৃঢ় এবং আন্তরিক করা যায়, মানসম্মত শিক্ষা তত বেশি নিশ্চিত করা যায়।”
উপসংহার: দেশের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে কর্মরত একজন চা-পোষা কর্মকর্তা, আমি। বিগত কিছুদিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে কর্মরত অফিসার, শিক্ষকমন্ডলী এবং প্রাথমিক শিক্ষাক্রমকে ঘিরে বিবিধ বিষয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক ও পড়াশোনা সংক্রান্ত বিবিভ বিষয় নিয়ে অনেক কিছু লিখেছি।এগুলো সবই ছিল, আমার অভিজ্ঞতা, অধ্যয়ন, চর্চা এবং বিভাগীয় বিভিন্ন ম্যানুয়েল ইত্যাদি পড়ে ও  বুঝার প্রচেষ্টা চালানোর ফসল। কিন্তু, বর্তমান নিবন্ধটি সাজানো হয়েছে, লোকপ্রশাসন তত্ত্ব এবং বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন ব্যবস্থায় প্রচলিত প্রশাসনিক এবং বাস্তব পর্যবেক্ষণের আলোকে। লেখাটি পড়ে আমার সকল সহকর্মী বেশ উপকৃত হবেন; এ প্রত্যাশা করি। সবার জন্য শুভ কামনা রইল।


মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০১৫

Primary education of Chakaria

চকরিয়ায় একটি গণ-পাঠাগার চাই
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
মহেশখালী, কক্সবাজার।

প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক স্যারের একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করে লেখাটি শুরু করা যেতে পারে। তিনি বলেন,“কোন জনপথ বা দেশ-জাতি কতটা অগ্রসর বা উন্নত তা পরিমাপের জন্য দু‘টি জিনিষ বিবেচনা করা যেতে পারে। একটি হলো; লাইব্রেরীগুলোতে রাখা বইপত্রের মান। আর, একটি হলো; বাজারে বিক্রির জন্য রাখা জিনিষপত্র।লাইব্রেরীগুলোতে যদি কালোত্তীর্ণ বা উচ্চ মার্গীয় বইপত্র পাওয়া যায় এবং বাজারে যদি সব ধরণের মানসম্মত পণ্য ও তাজা বা সতেজ-সজীব জিনিষপত্র পাওয়া যায়, তবে বুঝতে হবে, সে এলাকার মানুষ শিক্ষা-দীক্ষায় ও সভ্যতার পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে।” অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন, বাঙ্গালী জাতির অন্যতম এবজন শ্রেষ্ঠ সন্তান।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে সেখানেই দীর্ঘ ত্রিশ/চল্লিশ বছর শিক্ষকতা করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে জাতীয় অধ্যাপকের পদে সমাসীন করে মহিম্মানিত করেছিলেন।ষাটের দশকে যাঁরা বঙ্গবন্ধুকে, ভবিষ্যত বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী জাতির স্বদেশ ও বিশ্ব দরবারে অবস্থান, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান, অর্থনীতি, সরকার ব্যবস্থার রূপরেখা প্রভৃতি সম্পর্কে যাঁরা মতামত ও বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতেন; অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন, তাঁদের  মধ্যে অন্যতম।তাঁর মত আরও ‍ছিলেন; অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক রেহমান সোবহান, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্রাপক নীলিমা ইব্রাহীম, সচিব রুহুল কুদ্দুছ, ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।যাহোক, লিখছিলাম চকরিয়া উপজেলা সদরে একটি গণ-পাঠাগার এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তার কথা।এখানে(গণ পাঠাগারে) আরও থাকতে পারে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন ও ব্যবহার শিক্ষার কেন্দ্র। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা এবং দীর্ঘ ১৬ বছর চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান এবং সেখানে ১০ বছরের সাংবাদিকতা করার অভিজ্ঞতা ও সরকারি চাকুরির সুবাধে ১৫ বছর ধরে আমি সিলেট, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং বর্তমান ককসবাজার জেলায় অবস্থান করছি।সব সময় পড়াশোনা কেন্দ্রিক কাজ করেছি এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি।দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান বেশ কিছু লেখকের লেখা পড়েছি ও চর্চা করেছি, এখনও করে যাচ্ছি। যাঁরা আমাকে চিনেন, তাঁদের সাথে প্রায়ই এসব বিষয়ে আমার কথা-বার্তা হয়। পাশাপাশি, আমি বিগত ৭/৮ বছর ধরে তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন এবং এর প্রয়োগ করে প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের শিক্ষকদের মাঝে এসব নিয়ে কাজ করছি, শিখছি এবং শিখাচ্ছি।সর্বোপরি, জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করার আনন্দই আলাদা।যাঁরা একবার এ আনন্দ পেয়েছেন, তাঁর এসব হতে দূরে থাকতে পারেন না।আর সে উপলব্ধি হতেই আমাদের চকরিয়া সদরে অন্য অনেক কিছু থাকলেও, একটি গণ-পাঠাগার ভীষণ প্রয়োজন বোধ করি।তাছাড়া, বই-পুস্তকের ব্যবসায় লিপ্ত লাইব্রেরীগুলোতেও ভাল বইপত্র চকরিয়ায় পাওয়ায় দুস্কর।কিন্তু চকরিয়ায় এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক। একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও ৮/১০টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, সিনিয়ার মাদ্রাসা এবং বেশ কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য ভাল লেখকের পাঠ্য বই এবং সহায়ক বইপত্রের যথেষ্ট অভাব রয়েছে, চকরিয়া সদরে।অথচ চকরিয়ার কৃতি সন্তানরা সরকারি-বেসরকারি অনেক উচ্চতর ও গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন।তাঁরা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, চকরিয়ার এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা শেষে চট্টগ্রাম-ঢাকা শহরে পড়াশোনা করে। কিন্তু সব মানুষের সন্তানরা তো আর চকরিয়ার বাইরে পড়াশোনা করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ও তথ্য-প্রযুক্তির বিশাল ক্ষেত্রে বিচরণ করে নিজেদেরকে যোগ্য ও দক্ষ প্রজন্ম ‍হিসেবে  গড়ে তোলার সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে, তরূণ প্রজন্মের মাধ্যে বৃটশ আমলে কলাকাতয় সাংবাতিকতা করেছেন এমন ব্যক্তিত্ব আব্দুর রশিদ ছিদ্দিকী, খতিবে আজম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ, রাজনীতিবিদও সমাজ সেবক এডভোকেট জহিরুল ইসলাম, মাহমুদুল হক চৌধুলী, ফিরোজ উকিল, অধ্যাপক শফিউল আলম, ড. নুরুল মোস্তাফা, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, বিজ্ঞানী আনোয়ার হোসেন, ব্যাংকার নুরুল আলম, যুগ্ম সচিব পদে কর্মরত অবস্থায় পরলোকগমনকারি মন্জুর এলাহী ও নুরুল আমিন, অধ্যাপক শমশের উদ্দিন, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ, ডা: শফিকুল ইসলাম, মেজর জেনারেল (অব:) রুহুল আলম চৌধুরী, ডা: মাহবুব কামাল, ডা: জামাল উদ্দিন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মোহাম্মদ ইব্রাহিম, শহীদ লে: কর্ণেল আবু মুসা মো: আইয়ুব কায়সার প্রমুখের মত বড় মাপের ব্যক্তিত্ব; চকরিয়ায় আর তেমন একটা আসছেন না। আরও অনেক নাম না জানা চকরিয়ার কৃতি সন্তান আছেন ও ছিলেন। কিন্তু চকরিয়ার মত একটি সমৃদ্ধ উপজেলায় এ সংখ্যা নগন্য। আরও অনেক আলোকিত মানুষ চকরিয়ায় প্রয়োজন। প্রয়োজন একটি একটি শিক্ষিত, রুচিশীল এবং অগ্রসর জনগোষ্ঠী। হাজারে হাজারে তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ তরুণ প্রজন্ম এখানে থাকা দরকার।আর বড় মাপের মানুষ তৈরি করার জন্য চাই, ভাল ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং গণ-পাঠাগারের মত শিক্ষার আলোর মশালবাহী প্রতিষ্ঠান।বৃটিশ শাসনামল, পাকিস্তান আমল এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ আমলেও চকরিয়ায় অনেক কৃতি সন্তান ছিলেন ও আছেন। যাঁরা দেশ-বিদেশে সুনামের সাথে তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান ও ভূমিকা পালন করে গেছেন।চকরিয়ায় বর্তমান প্রজন্মের মাঝে প্রতিষ্ঠিত ও নেতৃস্থানীয় বড় মাপের মানুষের সংখ্যা মোটেই উল্লেখযোগ্য নয়। অথচ চকরিয়া বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বিবেচনায় একটি সমৃদ্ধ ও খুবই সম্ভাবনাময় উপজেলা।।উন্নয়ন অর্থনীতির সংজ্ঞার আলোকে গ্রোথ-সেন্টার। এখানে প্রচুর ধান উৎপাদন হয়, লবণ উৎপাদন হয় ও তামাক জাত পণ্য উৎপাদন হয়।চকরিয়ার মৎস্য সম্পদের জগৎ জোড়ে খ্যাতি রয়েছে।আছে, প্রাকৃতিক সম্পদ ও বনজ সম্পদ।তাছাড়া, চকরিয়া সদর এখন ব্যবসায়-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কমতি নেই এবং অত্যাধুনিক সব শপিং কম্লেক্স গড়ে ওঠেছে, অনেক।যার আকর্ষণে মহেশখালী-কুতুবদিয়া, লামা-আলীকদম, লোহাগাড়া, ঈদগাহ-রামুর মানুষজনও এখানে কেনা-কাটায় প্রবল ভীড় জমায়। শুধু অভাব দেখি, জ্ঞান-বিজ্ঞান-তথ্য-প্রযুক্তি এবং উন্নত ও মানসম্মত শিক্ষা-দীক্ষার কেন্দ্র বা প্রতিষ্ঠান। এ অভাব পূরণে একটি গণ-পাঠাগার অনেক খানি ভূমিকা পালন করবে বলে, আমার বিশ্বাস।চকরিয়া-পেকুয়া সংসদীয় আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মহোদয়, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় এবং উপজেলা নিবাংহী অফিসার মহোদয় ও স্থানীয় সচেতন-শিক্ষিত এবং বিত্তশালী জনগোষ্ঠী আন্তরিকভাবে চাইলে, এ ধরণের সফল উদ্যোগ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা আদৌ অসম্ভব নয়। খুবই সম্ভব। আর, মাধ্যমিক পর্যায়ে ভাল কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চকরিয়ায় থাকলেও, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও খ্যাতি অর্জন করতে পারছে না। এদিকে, কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া প্রয়োজন। ময়মনসিং, কুমিল্লা, হাটহাজারী প্রভৃতি এলাকা শিক্ষা-দীক্ষায় বেশ এগিয়ে গেছে। বিশেষত তথ্য-প্রযুক্তি এবং বিবিধ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, এসব এলাকায়। কিন্তু, কক্সবাজার জেলায় এর বড়ই অভাব দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে চকরিয়া উপজেলা নেতৃস্থানীয় অবস্থান দখল করে নিতে পারে।গড়ে তোলা যেতে পারে, শত শত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কারিগরী শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বা কেন্দ্র। এ ধরণের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করতে পারলে, একটি বিশাল দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে এবং দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান সব সরকারি-বেসরকারি প্রদিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়তে পারবে, তারা। আয় করতে সক্ষম হবে হাজার ডলার।আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, কম্পিউটার অপারেটর জাতীয় পদে কুমিল্লা অঞ্চলের কর্মীরাই অফিস-আদালতগুলো দখল করে আছে, বেশি। তারা পারলে, আমরা কক্সবাজারবাসী কেন পারব না?



বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০১৫

Primary School Teachers and Needs of Training

প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ চাহিদা
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ 
  সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
   মহেশখালী, কক্সবাজার।
বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য তাঁদের পেশাগত দক্ষতা ও মান বৃদ্ধিকল্পে বিষয় ভিত্তিকসহ বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের আয়োজন করছে। আর, মান-সম্মত পড়াশোনা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষকদেরকে পেশাগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মানোভাবাপন্ন করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই।আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ফিনল্যান্ড, দক্ষিন কোরিয়া, চীন, জাপানসহ যেসব দেশ প্রাথমিক শিক্ষায় সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছেছে; তারাও দীর্ঘদিন এ ধরণের পদক্ষেপ নিয়ে আজকের অবস্থানে এসেছে।আশা করি, আগামী ৫/১০ বছরের মধ্যে আমাদের দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষার মান কাংখিত পর্যায়ে উন্নীত হবে। যারা এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখেন, তারা ভাল করে জানেন যে, দেশের আজকের প্রাথমিক শিক্ষা সে ৫/১০ বছর পূর্বের অবস্থানে নেই।শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের নিরন্তর প্রচেষ্টা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে এখন গৌরব করা যায়।জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কতৃক এ ক্ষেত্রের সাফল্য সম্পর্কিত প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোই এর যথার্থ প্রমাণ। যাহোক, আমার আজকের নিবন্ধটি সাজানো হয়েছ; প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকগণের প্রশিক্ষণ চাহিদা নিয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় কর্মরত শিক্ষকদের জন্য প্রচলন করা হয়েছে, চাহিদা ভিত্তিক সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণের। এ বিভাগে এ ধরণের প্রশিক্ষণ চালু আছে দীর্ঘদিন ধরে। সেই ১৯৮৫/৮৬ সাল হতে। কিন্তু নাম এর নাম ছিল সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ। আর, আগে এ প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হত দু‘মাস অন্তর অন্তর। এখন এটি তিন মাস পর পর করা হয় এবং এর নতুন নামকরণ করা হয়েছে নীড বেইজড সাব-ক্লাস্টার ট্রেনিং বা চাহিদা ভিত্তিক সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ। আসলে, দেশে-বিদেশে কোন প্রতিষ্ঠিত সংগঠন বা সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কর্মদক্ষতা ও পেশাগত মান উন্নয়নের জন্য এ ধরণের প্রশিক্ষণ চলে আসছে, অনেক দিন হতে। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় কর্মরত শিক্ষকদের জন্য এ প্রথম(২০১৩ সাল হতে) চাহিদা ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি অবস্থিত ৪/৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকগণ এতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। আর প্রশিক্ষক থাকেন দু‘জন; একজন সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও অপরজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক।আগে এ প্রশিক্ষণের ম্যানুয়েল পাঠানো হত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে। আর এখন শিক্ষকমন্ডলী নিজেরাই নিজেদের প্রশিক্ষণ চাহিদা নির্ধারণ করবেন এবং প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল তৈরি করে তা অনুসরণ করে তাঁদের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা হবে।প্রত্যেক বিদালয়ে কর্মরত শিক্ষকগণ নিজ নিজ বিদ্যালয় হতে প্রশিক্ষণ চাহিদা পাঠাবেন। আর উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ইউ.আর.সি ইন্স্ট্রাক্টর, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং দক্ষ শিক্ষকগণের সমন্বয়ে ইউ.আর.সি-তে সভায় মিলিত হয়ে চাহিদা ভিত্তিক সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল তৈরি করবেন ও তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা হবে।এটাই আমাদের কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। মহেশখালী উপজেলায় কর্মরত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ তাঁদের যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন এমন কিছু বিষয় বেছে নিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রশিক্ষণ চাহিদা নিন্মে উল্লেখ করা হলো।
.          শিক্ষকদের পেশাগত জ্ঞান, পেশাগত অনুশীলণ এবং পেশাগত মূল্যবোধ ও স্থাপন তথা শিক্ষক যোগ্যতাগুলো ভালভাবে আয়ত্ত্ব করার জন্য প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
.          পাঠ পরিকল্পনা তৈরি এবং ব্যবহার করে পাঠদান করতে জানা।
.          অধিক শিক্ষার্থী বিশিষ্ট বিদ্যালয়ে সফল পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌশল জানা।
.          প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকগুলো ভালভাবে আয়ত্ত্ব করে তা ব্যবহারপূর্বক পাঠদান করতে জানা।
.          বিষয় ও বিষয়বস্তুর উপযোগি উপকরণ তৈরি ও ব্যবহার করে পাঠদান করতে জানা।
.          ইংরেজি বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা।
.          বিবিধ মূল্যায়ন পদ্ধতি এবং পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে জানা।
.          প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান বিষয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন।
.          চারু-কারু ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে জানা।
.          পাঠ্যসূচি বা সিলেবাস তৈরি করতে জানা।
.          কর্মরত শিক্ষকদের মাঝে পেশাজীবীসুলভ মনোবৃত্তি গড়ে তোলা বিষয়ে জানা।
.          ব্লাকবোর্ড, হোয়াইট বোর্ড, চকবোর্ড ইত্যাদির দক্ষ ব্যবহার সম্পর্কে জানা।
.          তথ্য-প্রযুক্তি বা মালিটমিডিয়া ব্যবহার করে পাঠদান করতে জানা।
.          কর্মরত শিক্ষক কম, অথচ শিক্ষার্থী বেশি; এমন বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্পর্কে জানা।
.          ভাষাগত দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ।
.          সময় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ধারণা লাভ করা।
.          বিষয় ও বিষয়বস্তু ভিত্তিক শিখন ফল তৈরি করতে পারা।
.          পশ্চাদপদ বা অসচেতন অভিভাবকদের সন্তানদের পড়াশোনায় আকৃষ্ট করার কৌশল জানা।
.          শিক্ষকমন্ডলী, এস.এম.সি এবং জনগোষ্ঠীর মধ্যকার যোগাযোগ এবং সম্পর্ক বিষয়ে জানা।
.          সরকারি চাকুরিজীবীদের ছুটি বিধি-বিধান সম্পর্কে জানা।
.          সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানা।
.          শিখণ-শেখানো ছাড়া বিদ্যালয়ের অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা সম্পর্কে জানা।
.          আধুনিক বা নতুন নতুন পাঠদান পদ্ধতি বিষয়ে পারদর্শী হওয়া।
.          গণিত ও গাণিতিক সমস্যা সমাধান বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা।
.          সন্জীবনী প্রশিক্ষণের আয়োজন করা।
.          বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু বা প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে পাঠদান বিষয়ক প্রশিক্ষণ আয়োজন।
এভাবে আরও অনেক বিষয় চাহিদা ভিত্তিক প্রশিক্ষণের বিষয় বা ম্যানুয়েলের কথা শিক্ষকগণ উল্লেখ করেছেন।

পরিশেষে, বলা যায় যে, চাহিদা ভিত্তিক সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণের ধারণা বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন শোনালেও, এমন প্রশিক্ষণ অনেক দিন ধরে চলে আসছে।এটি একটি চমৎকার ধারণা। আসলে এটি একটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও অনুসৃত পেশাগত উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ ভাবনা। খ্যাতিমান সব সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানে এ ধরণের পদ্ধতি প্রয়োগ হয়ে আসছে। প্রচলিত উন্নত প্রশিক্ষণ ধারণাগুলোর মত চাহিদা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ পদ্ধতি একটি বেশ কার্যকর কৌশল। আশা করা যায়, প্রাথমিক স্তরে এ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ পরিচালনা অব্যাহত রাখা হলে, কর্মরত শিক্ষকগণ আরও উন্নত, দক্ষ এবং যোগ্য হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মনসম্মত শিক্ষাদানের কারিগর রূপে শিক্ষকগণ তাঁদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবেন।

Chakaria Kurak Bidhapith

স্বনামধন্য চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ
                     ও অভিভাবক-জনগোষ্ঠীর ভাবনা
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
মহেশখালী, কক্সবাজার।

চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এমন একটি সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছেছে যে, যার সুনাম কক্সবাজার জেলা তথা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চকরিয়া ও কক্সবাজার, বান্দরবান এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় স্তরের শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনায় আকর্ষণ বোধ  এবং অধ্যয়নরতরা গৌরব বোধ করে থাকে।এসব এলাকার বিপুল সংখ্যক অভিভাবক ভাল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার কথা ভাবার সময় এ বিদ্যালয়টিও তাঁদের প্রথম বিবেচনায় থাকে।এক সময় চকরিয়া উপজেলার আরেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুটাখালীর কিশলয় উচ্চ বিদ্যালয়টি বেশ খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল।আশির দশকে ও নব্বইয়ের দশকে এ বিদ্যালয়ের সুখ্যাতি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। উক্ত বিদ্যালয় হতে পাশ করা শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে পরবর্তী শিক্ষাস্তরগুলো সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত হয়েছে, হতে পেরেছে। এক সময় খুটাখালী কিশলয় উচ্চ বিদ্যলয়টির শিক্ষার্থীরা দলে দলে চট্টগ্রাম কলেজ, মেডিকেল কলেজ, ইন্জিয়ারিং কলেজ (এখন বিশ্ববিদ্যালয়), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে দেখেছি এবং শুনেছি। আমি এ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক জনাব  চৌধুরী মোহাম্মদ তৈয়ব স্যারের সাথে একবার বছর দু‘/এক আগে  আমার কথা বলার সুযোগ হয়েছিল্। তিনি তখন সদ্য সরকারিভাবে লন্ডন সফর করে ফিরে এসে চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে কি একটা কাজে এসেছিলেন। সেসময় তাঁর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে আমার মতবিনিময়ের সুযোগ হয়েছিল।তাঁর শিক্ষা জীবন ও কিশলয় উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও এর বিকাশ-সুনামকরণসহ সব বিষয় আলাপ করেছিলাম। যাহোক, লিখছিলাম চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ-এর বর্তমান ও অতীত খ্যাতি এবং করণীয় বিষয়ে।বিদ্যালয়টিকে কেন্দ্র করে শত শত অভিভাবক বাসা-বাড়ী ভাড়া করে বসবাস করে সন্তানদের এখানে পড়াশোনা করাচ্ছেন।আর পার্শ্ববর্তী কৈয়ারবিল, বরইতলী, কাকারা, ডুলহাজারা, সাহারবিলসহ  ৪/৫ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকাগুলো হতেও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন কষ্ট করে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে এসে পড়াশোনা করছে।আশ-পাশে চকরিয়া সদরের শিক্ষার্থীরা তো পড়ছেই। কিশলয়ের মত বর্তমানে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ হতে পাশ করে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা সব উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষাস্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়ন করছে ও অধ্যয়ন শেষে আকর্ষণীয় সব পেশায়, ভাল ভাল চাকুরিতে, ব্যবসায়-বাণিজ্যে, রাজনীতিতে, সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে।কিন্তু ইদানিং স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং অভিভাবকদের মাঝে কোরক বিদ্যাপীঠের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে কিছুটা বিরূপ মন্তব্য এবং গুণ্জণ শোনা যায়। অত্র এলাকার সন্তান হিসেবে এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনকারি শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসেবে কোরক বিদ্যাপীঠ নিয়ে আমার কিছু পরামর্শ আছে বলে মনে করি।বিগত ৮/৯ বছর ধরে আমার সন্তানদের এ বিদ্যালয়ে পড়তে দিয়েছি এবং বাসা নিয়ে  বসবাস করে আসছি। আর বিদ্যালয়টির কার্যক্রম খুব কাছ দেখে আসছি। এ স্বনামধন্য চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠকে আমাদের কক্সবাজার এলাকার একটি দেশ সেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কথা এখনই ভাবতে হবে বলে আমার মনে হয়।খুশির খবর হলো, চকরিয়া তথা কক্সবাজার জেলার কৃতি সন্তান এবং চকরিয়া উপজেলার মাননীয় উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্ব জাফর আলম বি.এ অনার্স, এম.এ; মহোদয়ের মত শিক্ষা অনুরাগী ব্যক্তিত্ব এ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করে শক্ত হাতে এর হাল ধরেছেন।। এ মুহুর্তে চকরিয়াবাসীর জন্য জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে তাঁর মত যে কোন কিছুতে অবদান রাখতে পারেন এমন আর কেহ নেই। চকরিয়াবাসীর উচিত তাঁকে সার্বিক-সহযোগিতা এবং অকুন্ঠ সমর্থন দেয়া। তাঁর কোন বিকল্প নেই।আর বিদ্যালয় পরিচালানার সাথে আরও যুক্ত হয়েছেন;  চকরিয়ার নেতৃস্থানীয় ব্যক্ত্বিত্ব জনাব আলহাজ্ব নুরূল আবছার, চকরিয়া উপজেলার আরেক কৃতি সন্তান জনাব মো: আজিমূল হক চেয়ারম্যান, এ বিদ্যালয়ের এককালীন শিক্ষক এবং বর্তমানে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চকরিয়ার কৃতি সন্তান-শিক্ষাবিদ জনাব মো: আবু শোয়াইব, সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আলা উদ্দিন আজাদসহ স্বনামধন্য ব্যকিবর্গ। এবার চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের একজন শুভার্থী হিসেবে কিছু পরামর্শ তুলে ধরছি।
১। বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকমন্ডলীর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকরণ: প্রাথমিক স্তর এবং মাধ্যমিক স্তর পর্যায়ে কর্মরত শিক্ষকগণের জন্য পেশাগত মানোন্নয়ন ও দায়িত্ব-কর্তব্য পালন, তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক বা মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে পাঠদান, অত্যাধুনিক পাঠদান পদ্ধতি, উপকরণ সংগ্রহ ও ব্যবহারকরণ, শিশু বিষয়ক আইন-কানুন, জেন্ডার বিষয়ক ধারণা প্রদান, অধ্যয়নশীলতা, সবল-দূর্বল শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষতার সাথে পাঠদান, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার কৌশল, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আচার-ব্যবহার, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ ও সম্পর্ক রক্ষাসহ যাবতীয় বিষয়ে শিক্ষকদের দক্ষ্, যোগ্য এবং সমৃদ্ধকরণসহ বিবিধ বিষয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা প্রয়োজন।
২। শিক্ষানুরাগিদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন: সমগ্র কক্সবাজারবাসীর সহযোগিতা নিয়ে বিশেষত: চকরিয়া উপজেলার শিক্ষানুরাগি ব্যক্ত্বিগণের একটি সমাবেশ ডেকে তাঁদের মতামত-পরামর্শ গ্রহন করে বিদ্যালয়টিকে হাজার বছরের স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটাকে রূপদানের জন্য দূরদর্শী একটি পরিকল্পনা তৈরি করে তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
৩।সমৃদ্ধ লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠাকরণ: শিক্ষার্থী-শিক্ষকমন্ডলী সবাইকে যুগোপযোগি জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং পৃথিবীর তাবত সব লেখক-সাহিত্যিক, গুণি ব্যক্তিগণের বইপত্র ও তাঁদের বইগুলো পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করলে খুবই ভাল হয়।
৪। বিজ্ঞানাগার স্থাপন: অত্যাধুনিক সব উপকরণ এবং যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞানাগার গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন।
৫।কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠাকরণ: তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন ও এ সবের ব্যবহারে শিক্ষকমিন্ডলী এবং শিক্ষার্থীদেরকে অবাধ সুযোগ করে দেয়ার জন্য একটি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা প্রয়োজন।
৬। ইংরেজি শিক্ষা ও বিজ্ঞান ক্লাব ক্লাব স্থাপন: ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন এবং গণিত-বিজ্ঞান বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থী-শিক্ষকমন্ডলীকে অবারিত সুযোগ করে দেয়ার জন্য একটি করে পৃথক পৃথক ল্যাবা বা ক্লাব গঠন ও স্থপান করতে পারলে খুবই ভাল হয়।
৭।মতবিনিময় সভার আয়োজন: অন্তত তিন/চার মাস পর পর একবার করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থী (বিশেষত পি.এস.সি, জে.এস.সি এবং এ.এস.সি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে) মতবিনিময় সভার আয়োজন করা প্রয়োজন।
৮।সক্রিয় ম্যানেজিং কমিটি: বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে সক্রিয় রাখা এবং নিয়মিত সভা আহবান, সিদ্ধান্ত গ্রহন এবং তা নিবীডভাবে মনিটরিং করে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
৯।বিদ্যালয়ের ভামূর্তি উজ্জ্বলকরণ: প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বলকরণ এবং এর সুনাম বৃদ্ধি করার জন্য ইভটিজার ও উশৃংখল শিক্ষার্থীদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বহিস্কারকরণসহ কঠোর সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক।
১০।প্রধান শিক্ষক নিয়োগ: বিদ্যালযটির প্রধান শিক্ষক পদে এমন একজন শিক্ষাবিদ, দক্ষ ও যোগ্য ব্যাক্তিত্বকে নিয়োগ দেয়া আবশ্যক; যিনি হবেন চকরিয়া পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রয়াত প্রধান শিক্ষক জনাব নূরূল কবির চোধুরী বা নূর মোহাম্মদ বাঙ্গালী অথবা চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন স্বনামধন্য প্রধান শিক্ষক জনাব নুরূল কবিরের মত বা সে মাপের না হলেও, অনুরূপ মানের একজন ব্যক্তিত্ত্বকে।
১১। শিক্ষকদের জন্য কিছু কথা: চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে কর্মরত শিক্ষাকমন্ডলকে হতে হবে দূরদর্শী, পেশাজীবীসুলভ মনোবৃত্তি সম্পন্ন, নিজ নিজ বিষয়ে দক্ষ ও সমৃদ্ধ । আর তাঁদের মনে রাখা প্রয়োজন, এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ৫/১০/২০ বছরের জন্য নয়, চিরদিরে জন্য। সুতরাং এর সুনাম অক্ষুন্ন রাখা এবং এর মান কাংখিত পর্যায়ে উন্নীত করার ক্ষেত্রে তাঁদের দায়-দায়িত্ব মোটেই কম নয়।
১২।সহ-শিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম জেরিদারকরণ: শিক্ষার্থীদের জন্য সহ-শিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম বিশেষত: সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, নাটক চর্চা এবং অভিনয়ের প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ভাষা, গণিত ও বিজ্ঞান চর্চামূলক প্রতিযোগিতা, সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, জাতীয় দিবসগুলো ঝাঁকজমকের সাথে পালনের জন  বিশেষ অনুষ্ঠান ও প্রযোগিতা এবং পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানাদির আয়োজনসহ এ ধরণের কাজগুলো বেশি বেশি আয়োজন করা প্রয়োজন। এতে শিক্ষার্থীদের উন্নত অভিরুচি তৈরি, মানস গঠন, সাংস্কৃতিক বোধ সৃস্টি, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও সমৃদ্ধ হওয়া, দেশজ ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে ভালভাবে জানা, সৃজনশীলতা এবং সুকুমার বৃত্তির স্বাভাবিক বিকাশ ঘটবে।

পরিশেষে বলব, উপরে বর্ণিত ভাবনাসমূহ বা পরামর্শগুলো একান্তই আমার নিজের।আমার নিজের সন্তানরা বিগত প্রায় এক দশক ধরে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা করছে। স্ব-পরিবারে বিদ্যালয়টিতে সন্তানদের পড়াশোনার সুবিধার্থে বাসা ভাড়া করে বসবাস করছি।কিছু কিছু অভিভাবককে দেখেছি ও শুনেছি যে, এ বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রমে তারা খুবই অসন্তোষ্ট এবং বিরূপ মনোভাব পোষণ করেন।প্রতিষ্ঠানটিকে দরদ দিয়ে ভালবাসি বলে এবং চকরিয়ার একজন সন্তান হিসেবে নিজের অনুভুতিগুলো এখানে প্রকাশ করলাম। যারা এ বিদ্যালয়কে এবং শিক্ষার মানকে গুরুত্ব দেন, তাঁরা অন্তত আমার সাথে বর্ণিত বিষয়গলো নিয়ে সহমত পোষণ করবেন।আমার এ নিবন্ধটি কারও পছন্দ না হলে, ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।জিতে রহো, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ।




AUEO and Primary School Teachers

সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ 
  সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
                                  মহেশখালী, কক্সবাজার।

প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ এবং বিদ্যালয়ে কর্মরত প্রধান শিক্ষক-সহকারি শিক্ষকগণ একে অপরের পরিপূরক স্বরূপ কাজ করে যাচ্ছেন।তাঁদের মধ্যকার মিথস্ক্রিয়া ও পারস্পরিক সম্পর্ক সরাসরি। বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ অনেকটা পরোক্ষ বা মাধ্যম হয়ে শিক্ষকদের সাথে কাজ করছেন।এ সম্পর্ক খুবই আন্তরিক এবং মধুর হলে, সকল শিশুর মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে কাংখিত সাফল্য পাওয়া যাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষক, সহায়ক, পরামর্শক ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যকার সম্পর্ক আবার মেন্টর এবং মেন্টির মতও বটে।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত শিক্ষকগণের পেশাগত এবং চাকুরিগত দক্ষতা ও যোগ্যতার বিকাশ এবং উন্নয়ন; আর দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তণ আনয়নের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখতে পারেন, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ।সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ প্রধানত উপজেলা পর্যায়ে প্রথমিক শিক্ষা বিষয়ক যাবতীয় তথ্যাদি এবং কার্যক্রম পরিচালনায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়গণকে সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন। বিশেষত তাঁদের ক্লাস্টারের বিদ্যালয়গুলো সুচারোভাবে পরিচালনা, সরকারি আদেশ-নির্দেশ বা চিঠিপত্রের বার্তা প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকগণের নিকট পৌঁছে দেয়া এবং বাস্তবায়ন করানো, শিক্ষার্থীদের সকল তথ্য, পড়াশোনা বিষয়ক তথ্য, পরীক্ষা পরিচালনা প্রভৃতি কাজে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেন ও সহায়তা করে থাকেন, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ।তিনি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন এবং চাহিদা ভিত্তিক সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন।তাছাড়া, শিক্ষকদের অন্যান্য প্রশিক্ষণ, (পেশাগত ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক) দিয়ে থাকেন।অধিকন্তু, সহকারি উপজেলা অফিসারগণ উপজেলা প্রশাসন কতৃক বিভিন্ন সরকারি দায়িত্বও পালন করে থাকেন।
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও কর্মরত শিক্ষকমন্ডলী: সাধারণত; সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি শিক্ষকগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ কতৃক সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ তার দয়িত্বপ্রাপ্ত ক্লাস্টারের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনায় উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি শিক্ষকগণের পাঠদান কার্য়ক্রম পরিচানাসহ বিদ্যালয় পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনাগত সকল কাজে সহায়কের ভূমিকা পালন করে থাকেন।নিন্মে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকগণের মধ্যকার কাজের ধরণসমূহ ও তাঁদের মধ্যকার সম্পর্ক, সাধারণভাবে তুলে ধরা হলো।
.          উভয়ের মূল দায়িত্ব প্রাথমিক স্তরের শিশুদের ভর্তি, বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতি এবং প্রত্যেক শিশুর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি শিক্ষকগণ প্রধানত; প্রত্যেক শ্রেণির শ্রেণি পাঠদান সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করে থাকেন। প্রধান শিক্ষকগণ বিদ্যালয় পরিচালনা, স্থানীয় জনগোষ্ঠী, অভিভাবক, এস.এম.সি এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার বা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে সব ধরণের যোগাযোগ রক্ষা এবং সহকারি শিক্ষকগণের কার্যক্রম সরাসরি সমন্বয় করে থাকেন। আর সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাঁদের সকল কাজের অনুমোদন ও তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে থাকেন।
.          সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ ও প্রধান শিক্ষকগণ বিদ্যালয পরিদর্শন ও তত্ত্বাবধানিক এবং পড়াশোনা বিষয়ক সার্বিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আর সহকারি শিক্ষকগণ প্রধানত পাঠ পরিকল্পনা তৈরি, পাঠদানের প্রস্ততি গ্রহন, উপকরণ তৈরি এবং শ্রেণি পাঠদানসূচি অনুসরণ করে শ্রেণি পাঠদান কাজ এবং সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকেন ও প্রধান শিক্ষকগণকে অন্যান্য কাজে সহযোগিতা করে থাকেন।তাছাড়া, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার কতৃক প্রদত্ত্ব বিবিধ সরকারি নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করে থাকেন।
.          সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকগণকে তিন মাস অন্তর অন্তর চাহিদা ভিত্তিক সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত উন্নয়নমূলক ও প্রাথমিক শিক্ষার নতুন নতুন ধ্যাণ-ধারণা-পাঠদান পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। আর শিক্ষকগণ সে আলোকে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে তা প্রতিফলন ঘটান ও বাস্তবায়ন করেন।
.          সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ নিয়মিত বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন এবং বিদ্যালয় পরিচালনা ও পড়াশোনা বিষয়ক বিভিন্ন লিখিত এবং মেখিক নির্দেশনা-পরামর্শ দিয়ে থাকেন।আর শিক্ষকগণ সেগুলো মেনে চলেন।
.          সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের জরূরী আদেশ-নির্দেশ সম্বলিত চিঠিপত্র, পরিপত্র, বিধি-বিধান, প্রজ্ঞাপন, প্রশাসনিক ও একাডেমিক সব ধরণের বার্তা শিক্ষকদের নিকট জানিয়ে দেন বা প্রকাশ করেন। আর শিক্ষকগণ তা মেনে চলেন ও বাস্তবায়ন করেন।
.          সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ সরাসরি প্রত্যেক শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। আর শিক্ষকগণও তাঁদের সুবিধা-অসুবিধাসমূহ সরাসরি তাঁদের নিকট ব্যক্ত করেন।
.          শিক্ষকগণের বেতন-ভাতা প্রদান, বদলী, ছুটি ও অন্যান্য বিষয়াদির আবেদনপত্রে অনুমোদন দেন, সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ। আর সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের নিকট এসব বিষয় সুপারিশ সহকারে পেশ করে থাকেন।
.          প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি শিক্ষকগণ সারা বছর বিদ্যালয় কার্যক্রম পরিচালনা, পাঠ্য বই সংগ্রহ, শ্রেণি পাঠদানসূচি, উপবৃত্তি বিতরণ কার্যক্রমসহ সকল কাজ পরিচালনায় সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণের অনুমোদন ও সহযোগিতা নেন। আর সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ এসব কাজে পুরোপুরি সহায়তা করে থাকেন।
.          প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও সাময়িক পরীক্ষা এবং বার্ষিক পরীক্ষা পরিচালনা ও প্রশ্নপত্র প্রস্তুতকরণ সংক্রান্ত সকল কাজে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ শিক্ষকদেরকে নির্দেশনা দান, পরামর্শ প্রদান, দায়িত্ব বন্টন প্রভৃতি কাজ করে থাকেন।আর শিক্ষকগণ এসব কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করে থাকেন।
.          প্রতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার্থীদের তালিকা বা ডি.আর প্রস্তুতকরণ, পরীক্ষা গ্রহণ, পরীক্ষা গ্রহনের জন্য শিক্ষকদের কেন্দ্রওয়ারী দায়িত্ব বন্টন, উত্তরপত্র অন্য উপজেলায় আদান-প্রদান, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, নিরীক্ষণ ও যাচাইকরণ, ফলাফল প্রস্তুতকরণসহ সকল কাজে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ শিক্ষকদের সহায়তায় উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে চূড়ান্তভাবে তৈরি করে দেন।
.          বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি, শিক্ষক-অভিভাবক কমিটি  ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং অভিভাবকদের নিয়ে সময়ে সময়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ ভুমিকা পালন করে থাকেন।
.          সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ জাতীয় দিবস উদযাপন, ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব পালনসহ বিবিধ কাজে উপজেলা প্রশাসনকে সহায়তা করে থাকেন।
.          আন্ত:প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টূর্ণামেন্ট ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টূর্ণামেন্ট  আয়োজন, জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতা ও মৌসুমী প্রতিযেগিতা আয়োজন, জাতীয শিক্ষা সপ্তাহ আয়োজনসহ অনেকগুলো কাজ সম্পাদনে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণকে ভূমিকা পালন করতে হয়।

সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি: বিগত ২০০০ সালের জুন মাস হতে সহকারি ‍উপজেলা শিক্ষা হিসেবে কাজ করে আসছি।নিয়মিত প্রমোশন ইত্যাদি না হওয়ায় মনে অনেক কষ্ট আছে বটে। কিন্তু আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট, আমার কাজে। কারণ, আমি একদল শিক্ষিত, মার্জিত, রুচিশীল, মননশীল মানুষ ও শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করে থাকি। আমি করে থাকি; জাতি গঠনের কাজ, শিক্ষিত নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলার ভিত্তিভূমি তৈরি করে দেয়ার কাজ; নিস্পাপ-নির্দোষ শিশুদের উন্নতও শিক্ষিত মানস তৈরি ও তাদেরকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ এবং জাতি গঠনের কারিগরদের পেশায় ও চাকুরি বিধি-বিধান  বুঝতে ও সমৃদ্ধ হতে সহায়তার কাজ।আমি আবার এ ১৫ বছরের মধ্যে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে ৬ বছর মত উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বও পালন করার সৌভাগ্য অর্জন করেছি।আমি আমার কাজটাকে-চাকুরিটাকে বেশ উপভোগ করি। বেশ আনন্দ ও মজা পাই; শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করতে।আমি বর্তমান কর্মস্থলসহ ৫ টি উপজেলায় কাজ করেছি। সেগুলো হলো; সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই, চট্টগ্রাম জেলার রাংগুনিয়া, রাংগামাটি চজলার রাজস্থলী, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ও মহেশখালী উপজেলা।আমার সাথে যে সব শিক্ষক কাজ করেছেন, আমার স্মপর্কে তাঁদের অনুভূতি কী জানি না। তবে আমার অনুভূতি খুবই আনন্দদায়ক। শিক্ষকগণ সবাই উচ্চ শিক্ষিত এবং সুন্দর মন-মেজাজ ও যোগ্যতার অধিকারি। তাঁরা সমাজে সম্মানিত মানুষ। আর তাঁদের কর্মকর্তা-সহকর্মী, আমি।এর চেয়ে মজার ব্যাপার আর কিই বা হতে পারে! যদিও আমাদের পদের এই চাকরিটাকে অনেকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে থাকে। তারা হয়ত ওভাবে দেখার ক্ষমতা রাখে না বলে তা করে থাকে।শিক্ষক;রে মত এসব উন্নত মানসের অধিকারি মানুষদের সাথে হরহামেশা কথা বলি, মেলামেশা করি, প্রশিক্ষণ দিই, দিক-নির্দেশনা দিই, পরামর্শ দিই। তাঁরা তা মানেন, বাস্তাবায়ন করেন। আবার অনেকে শুধু শুনে যান, মানেন কম। কিন্তু কাজটা চলছেই, নিত্যদিন। আমি শিক্ষকদের। শিক্ষকরা আমারই। আমি তাঁদের কষ্ট দিইনা, তাঁরাও না। মাঝে-মধ্যে হয়ত কাজ আদায় করার জন্য একটু-আধটুকৃ বকাঝকা করি।কিন্তু আমাদের উভয়ের কাজটা খুবই দায়িত্বপূর্ণ, পবিত্র এবং শিশুদের মানুষের মত মানুষ করার কাজ। সুসভ্য জাতি গঠনে সাহায্য করা। জাতিকে শিক্ষিত করা। শিক্ষিত প্রজন্ম গড়ে তোলা। সর্বোপরি, দেশ মাতৃকার ভালবাসায় সিক্ত হয়ে দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত বিনির্মাণ করা।
উপসংহার: প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারবৃন্দ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকমন্ডলী একই লক্ষ্য অর্জনে দায়িত্ব পালনরত দু‘টি পক্ষ। দু‘পক্ষের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এবং দায়িত্ব-কর্তব্য মূলত একই।সকল শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা; যাদের বয়স ৫+----১০+। এ বয়সের কোমলমতি শিশুদের সবাইকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা এবং তাদের মাঝে মানসম্মত শিক্ষা বা জ্ঞানের আলো বিস্তরণই আমাদের কাজ।চেনা-জানা পথে হাঁটছি আমরা দু্ই পক্ষ।চলুন, আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে আমরা একটি জাতিকে, বাংলাদেশকে সুসভ্য, সুশিক্ষিত ও উন্নত মানুষে ভরপুর করে দিই। এখানেই সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকমন্ডলীর মধ্যকার সম্পর্কের বীজ পুতিত আছে।