সৈয়দ নকীব আল-আত্তাস: মালয়েশিয়ান
বর্ষিয়ান মুসলিম দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্*
সৈয়দ মোহাম্মদ আল-নকীব বিন আলী আল-আত্তাস
বিশ্ব মাপের একজন মুসলিম দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ। তিনি ১৯৩১ সালে জন্ম গ্রহণ করেন।
ইসলামীক সকল বিষয় তাঁর স্মৃতিতে যেন জ্বল জ্বল করে, পুরোপুরি। একইভাবে পৃথিবীর
যাবতীয় জটিল-কঠিন সকল ধর্মতত্ত্ব, শিক্ষা, দর্শন, মেটাফিজিক্স (অধিবিদ্যা), ইতিহাস
এবং সাহিত্য বিষয়েও সৈয়দ আল-আত্তাস সমান পারদর্শি। তিনি জ্ঞানের ইসলামায়নের
বিপক্ষে। তাঁর দর্শন ও শিক্ষা পদ্ধতির একটিই লক্ষ্য; “মন, দেহ ও আত্নার ইসলামায়ন
এবং এর প্রভাব প্রতিফলিত হবে আধ্যাত্নিক এবং প্রকৃতিসহ মুলমান ও অন্য
ধর্বালবলম্বীদের ব্যক্তিগত এবং সামগ্রিক জীবনযাত্রায়। সৈয়দ আল-আত্তাস তাঁর
ভাবনা-দর্শন প্রকাশে ২৭টি গ্রন্থ রচনা করেন। ইসলামী চিন্তা-ধারা এবং সভ্যতা;
বিশেষত: সুফিবাদ, মহাকাশ বিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, অধিবিদ্যা, দর্শন এবং মালে ভাষা
ও সাহিত্য; প্রভৃতি বিষয় তাঁর রচনাবলিতে আলোকপাত করা হয়েছে। এ নিবন্ধে আমরা
আল-আত্তাসের একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরার প্রয়াস চালাব।
শৈশব
এবং শিক্ষা গ্রহণ:
সৈয়দ মোহাম্মদ নকীব আল-আত্তাস জাভার বোগর
শহরে ঐতিহাসিক দরবেশ ও সুফি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বসূরিগণ মহানবী হযরত
মুহাম্মদ (দ:)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের বংশধর। মা-বাবার তিন সন্তানের মধ্যে তিনি
দ্বিতীয়। তাঁর বড় ভাই সৈয়দ হোসেইন আল-আত্তাস দীর্ঘদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও রাজনীতি করেন। তিনি শিক্ষাবিদ টুংকু আব্দুর রহমানের
নিকটাত্নীয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৬ সালে জোহর শহরে মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা
করেন, তিনি। তিনি মালয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম এবং ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে গভীর
পড়াশোনা করেন। ১৯৫১ সালে আল-আত্তাস মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে মালয় সেনাবাহিনীতে
অফিসার ক্যাডেট পদে যোগদান করেন। তিনি ১৯৫৩ সাল হতে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের
চেস্টার এটন হলে এবং পরে রয়েল মিলিটারি একাডেমীতে সামরিক বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা
করেন। ইংল্যান্ডে সামরিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে তিনি আধুনিক পাশ্চত্য সভ্যতার
সাথে সরাসরি পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। তিনি প্রশিক্ষণ একাডেমীর গ্রন্থাগারে
সুফিধারার ভাবনা-চিন্তা; বিশেষত: আল্লামা জামি সম্পর্কে পড়াশোনা করার সুযোগ পান।
তিনি স্পেন হতে উত্তর আফ্রিকা পর্যন্ত ব্যাপক দেশ সফর করেন, সেখানকার ইসলামী ইতিহাস,
সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। গভীর ও ব্যাপক পরিসরে অধ্যয়ন
এবং পড়াশোনা চর্চারে জন্য আল-আত্তাস সেনা অফিসারের চাকুরি হতে পদত্যাগ করেন।
চাকুরি ছেড়ে দিয়ে তিনি সিঙ্গাপুরের মালয় ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। সেখানে তিনি
১৯৫৭ সাল হতে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে
পড়াশোনা করা কালে সাহিত্য বিষয়ে এবং সুফিবাদ চর্চা বিষয়ে তিনি দুটি গ্রন্থ রচনা
করেন। এসময় আল-আত্তাস কানাডার মন্ট্রিলস্থ ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষা
বিষয়ে তিন বছর পড়াশোনা করার জন্য বৃত্তিপ্রাপ্ত হন। সে বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি,
১৯৬২ সালে ইসলামী দর্শন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য নম্বর পেয়ে এম.এ পাশ করেন। আল-আত্তাস
ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ.জে আর্বেরীর অধীনে ‘স্কুল অব
ওরিয়েন্টাল এন্ড আফ্রিকান স্টাডি’জে অধ্যয়ন করতে যান। এখানে তিনি হামজা ফন্সুরির
মরমীবাদের উপর তিনি ডক্টোরাল থিসিস রচনা করেন দুই খন্ডে। মালয়েশিয়ায় ফিরে এসে তিনি
কুয়ালালামপুরস্থ ‘ইউনির্ভাসিটি অব মালেশিয়ায়’ মালয় ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রধান
অধ্যাপক পদে যোগদান করেন। অন্য শিক্ষকদের সাথে পরার্শক্রমে তিনি তাঁর বিভাগের
পাঠ্যসূচিসহ সকল শিক্ষাকার্যক্রমকে ঢেলে
সাজান। অত:পর আল-আত্তাস ‘ন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অব মালেশিয়া’তে মালয় ভাষা ও
সাহিত্য বিষয়ের বিভাগীয় প্রধান পদে যোগদান করেন। তিনি মালয় ভাষাকে উচ্চ শিক্ষার
মাধ্যম হিসেবে প্রচলনের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করেন। আর মালয় ভাষা ও সাহিত্যকে
উন্নত এবং আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৭
সালে আল-আত্তাস কুয়ালালামপুর মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল
ইস্টিটিউট অব ইসলামিক থট এন্ড সিভিলাইজেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির সকল
বিভাগে ও ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে ইসলামী সভ্যতার ব্যাপারে ব্যাপক জ্ঞান, সংস্কৃতি ও
ঐতিহ্য সঞ্চারের লক্ষ্যে তিনি এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর এ উদ্যোগের
কারণে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগত সফল প্রভাব পড়েছে।
মালয়
সাহিত্য ও সুফিবাদ চর্চা:
সৈয়দ নকীব আল-আত্তাস একজন উঁচুমানের সাহিত্যিক।
তিনি ১৯৫৯ সালে ‘রংগকাজন রুবাইয়াত’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। সুফিবাদের
গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক এবং মালয় ভাষীদের মাঝে সুফিবাদের চর্চা বিষয়টি নিয়ে তিনি
একটি গুরুত্বপূর্ণ বই লিখেন, ১৯৬৩ সালে। আর ১৯৬৫ তাঁর ডক্টোরাল থিসিস ‘হামজা
ফান্সুরি’ গ্রন্থ আকারে (যেটি তাঁর সবচেয়ে মূল্যবান বই) প্রকাশিত হয়। মালয়
ভাষাবাসি সুফিবাদী মানুষদের জন্য এটি শ্রেষ্ঠতম এবং বিতরর্ক সৃষ্টিকারি গ্রন্থ,
এটি। আল-আত্তাস ইসলামের ইতিহাস, ভাষা বিজ্ঞান এবং মালয় সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ে
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। আর এক্ষেত্রে তাঁর মেন্টর বা গুরু হলেন; হামজা
ফান্সুরী। বস্তুত: মালয় ভাষায় ইসলামিক বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা এবং লেখালেখি তাঁকে
ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছে এবং ইসলামের মাহাত্ব মালয় ভাষা ব্যবহারকারিদের নিকট
তিনি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরে সাফল্য প্রদর্শন করতে সক্ষম হন। তিনিই মালয় ভাষায়
বুদ্ধিবৃত্তীয় এবং দার্শনিকতার সূচনা ঘটান।
ইসলাম
ও অধিবিদ্যা বা মেটাফিজিক্স:
সৈয়দ
আল-আত্তাস মনে করেন, আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কোন জিনিষ ‘শুধুই জিনিষ মাত্র’ এবং
এতে বৈচিত্রময় বিশ্ব অধ্যয়নকে এর মধ্যেই সমাপ্তি ঘটিয়েছে। অবশ্যই তাতে বস্তুগত
উপকারিতা বয়ে এনেছে, কিন্তু সাথে করে নিয়ে এসেছে প্রকৃতির নিজকে নিজে ধ্বংসের পথে
নিয়ে যেতে অনিয়ন্ত্রিত এবং অপূরনীয় ক্ষতি। তিনি এর তিব্র সমালোচনা করে বলেন যে,
উচ্চতর আধ্যাত্নিক বিবেচনা না করে প্রকৃতিকে বুঝতে চেষ্টা করা এবং প্রকৃতির
যথেচ্ছা ব্যবহার মানুষকে মানুষ প্রভু ভাবতে অথবা তাঁর সমকক্ষ বানাতে শিখেয়েছে।
উদ্দেশহীন প্রচেষ্টা বা জ্ঞান অনুসন্ধানকে সত্যের পথ হতে বিচ্যুত করে দিয়েছে তা। ফলশ্রুতিতে,
সে ধরণের প্রচেষ্টার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাগিত হয়েছে বলে তিনি তনে করেন।
আল-আত্তাস পাশ্চাত্য সভ্যতা সম্পর্কে অভিমত প্রকাশ করেন, ‘এটা নিত্য পরিবর্তিত
হচ্ছে এবং তা হয়ে পড়ছে, তা কখনো অর্জন সম্ভবপর নয়, এমন কোন বিষয়ে পরিণত হযেছে।’
তিনি বিশ্লেষণ করে দেখান যে, অনেক প্রতিষ্ঠান এবং জাতি পাশ্চাত্যের এ ধরণের চেতনায়
প্রভাবিত হয়েছে এবং অব্যাহতভাবে নিজেদের প্রয়োজনে তাদের অবস্থানকে উলট-পালট করে
নিয়েছে এবং মৌলিক উন্নয়ন লক্ষ্য হতে
বিচ্যুত হয়েছে ও পাশ্চাত্যের ধারণাকে
গ্রহণ করার শিক্ষার লক্ষ্য হতে বিচ্যুতি ঘটিয়েছে। তিনি ইসলামিক অধিবিদ্যার কথা
উল্লেখ করে যুক্তি প্রদর্শন করেন যে, বাস্তবতা; স্থায়ীত্ব এবং পরিবর্তনের সম্মিলিতরূপ
বাহ্যিক পৃথিবীর স্থায়ী উপাদানগুলোতে অবশ্যাম্ভাবীরূপে পরিবর্তন ঘটিয়ে চলেছে।
আল-আত্তাসের মতানুসারে ইসলামিক অধিবিদ্যা হলো; ঐক্যবদ্ধ একটি ব্যবস্থা, যা মানুষের বোধের অতিযৌক্তিক এবং আন্ত:আধিপত্যে
ইতিবাচকভাবে সহজাত প্রভৃতিকে প্রকাশ করে দেয়। তিনি এটাকে দার্শনিক সুফিবাদিতার
দৃষ্টিকোণ হতে দেখেন। তিনি আরও বলেন যে, ইসলামী ঐতিহ্যে অপরিহার্যতাবাদী এবং
অস্তিত্ববাদীরা বাস্তবতার প্রকৃতি বুঝতে পারে। এখানে প্রথম স্তরটির (অপরিহার্যতাবাদ)
প্রতিনিধিত্ব করেন, দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ এবং পরবর্তিতে সুফিগণ।
অপরিহার্যবাদীরা মাহিয়ার (কুদিতী) নীতিতে অটল থাকেন। পক্ষান্তরে, অস্তিত্ত্ববাদিরা
উজুদ নীতিতে বিশ্বাস করেন, যা একান্তই অন্তর্নীহিত অভিজ্ঞতার সারাতসার, শুধুমাত্র
কোন যৌক্তিক বিশ্লেষণ বা যুক্ত দিয়ে কোন বিষয় বিশ্লেষণ নয়। এটা নিশ্চিতভাবে
দার্শনিক এবং বৈজ্ঞানিক কল্পনা ধারাকে বস্তুর পূর্ব ধারণা এবং অস্তিত্ত্বের
মূলস্তরে নিহীত, তা প্রকৃতির অধ্যয়নকে নিজেই অবসান ঘটায়। আল-আত্তাস অভিমত প্রকাশ
করেন যে, মানস বাস্তবতার অতি উচ্চস্তর হলো অজুদ, যা বস্তুর সারাদসারের বাস্তব স্তর
এবং এর পরবর্তী অবস্থান হলো মাহিয়াহ। এভাবে তিনি কোন বিষয়ের অতি গভীরে প্রবেশ করে
বিশ্লেষণ করার সূক্ষদর্শি একজন প্রতিভাবান মানুষ।
সাফল্য ও কৃতিত্ত্ব:
আল-আত্তাস
মালয় ভাষা ও সাহিত্যকে অনেক উঁচু মর্যাদার স্তরে নিয়ে গেছেন; বিশেষত ভাষাশৈলী এবং
শব্দভান্ডার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। তিনি ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
অব মালয়েশিয়ার অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা এবং প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ
মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার দানের মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ভাষার স্তরে মালয় ভাষার প্রচলন
ঘটাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্সস্টিটিউট
অব মালে ল্যাংগুয়েজ, লিটারেচার এন্ড কালচার প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করেন। তিনি
প্রাচ্য ভাষাবিদ এবং ইসলামী ও মালয় সভ্যতার ন্ডিতজনদের দ্বারা আন্তর্জাতিক
স্বীকৃতি লাভ করেন। আল-আত্তাস ১৯৭৩ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলাম
শীর্ষক ২৯তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সভাপতির পদ অলংকৃত করেন। সমসাময়িক কালের দর্শন
শাস্ত্রের বিকাশে অনন্য অবদান রাখায় তিনি এম্পেরিয়াল ইরানিয়ান একাডেমী অব
ফিলোসফি-এর ফেলো হিসেবে ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ১৯৭৬ সালে
লন্ডনে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড অব ইসলাম ফেস্টিভাল-এর প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন এবং এ
উপলক্ষে আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক কন্ফারেন্সের বক্তা এবং ডেলিগেট ছিলেন।
১৯৭৭ সালে পবিত্র মক্কা শহরে অনুষ্ঠিত ইসলামী শিক্ষা বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক
সম্মেলনেও একজন বক্তা এবং ইসলামী শিক্ষার লক্ষ্য ও সংজ্ঞায়ন শীর্ষক একটি অধিবেশনের
সভাপতিত্ব করেন। ১৯৭৬-৭৭ সালে আল-আত্তাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলপিয়ায়
টেম্পল ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে
সিরিয়ার আলেপ্পোতে ইউনেস্কোর উদ্যোগে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ক এক সভায় বিশেষজ্ঞ
হিসেবে সভাপতিত্ব করেন। পরের বছর ১৯৮৯ পাকিস্তানের তৎকালিন প্রেনিডেন্ট জিয়াউল হক
আল-আত্তাসকে আল্লামা ইকবাল-এর জন্ম শতবার্ষিকী স্বর্ণ পদকে ভূষিত করেন। এভাবে তিনি
দেশে-বিদেশে অনেক পদক ও পুরস্কার লাভ করেন। এক কথায় ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী সমকালিন
বিশ্বে আল-আত্তাস বহুমুখি প্রতিভার অধিকারি একজন জীবন্ত কিংবদন্তি বুদ্ধিজীবী।
উপসংহার: সৈয়দ মোহাম্মদ আল-নকীব
বিন আলী আল-আত্তাস, সারা বিশ্বে জীবিত এবং পরলোকগমনকারি বিশ্ব মাপের লেখক,
দার্শনিক এবং বুদ্ধিবৃত্তির জগতে বিচরণকারিদের মধ্যে অন্যতম একজন মনীষী। তাঁর কদর
পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য জগতের সর্বস্তরে। মুসলিম দেশগুলোতে এমন ব্যাক্তিত্ত্ব বিরল।
সাধারণত মুসলমানদের মধ্যে ইসলামী বিষয়ে পান্ডিত্য অর্জন সহজাত ব্যাপার। আবার
মার্কিন বা ইউরোপীয় এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত দেশগুলোতে তাদের সভ্যতা,
সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের আলোকে বড় মাপের মানুষদের পরিচিতি গড়ে ওঠে। আর ধর্মনিরপেক্ষ
ও মুসলিম ঐতিহ্যের দেশ মালয়েশিয়ায় জন্মগ্রহণকারি আল-আত্তাসের মত অত বড় মাপের মানুষ
গরড় ওঠা অবাক-বিস্ময়ের ব্যাপার বৈ কি!
* সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার, মহেশখালী,
ককাসবাজার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন