শুক্রবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৫

Barmij GPS Inspection

বার্মিজ সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
মহেশখালী, কক্সবাজার।
মহেশখালী উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণের ২১ দিনব্যাপী লিডারশীপ প্রশিক্ষণ চলছে। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে ৭ম দিনে একটি অগ্রগামী বিদ্যালয় পরিদর্ন করার কথা রয়েছে। পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহী রাখাইন পাড়ার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিদর্শনের জন্য বেছে নেয়া হয়।প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারি ২৫ জন প্রধান শিক্ষক ৪ টি দলে ভাগ হয়ে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। তাঁরা বিদ্যালয়টির সামগ্রিক চিত্র প্রশিক্ষণ সেশনে তুলে ধরেণ। ১৯১৭ সালে  প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি রাখাইনপাড়য় অবস্থিত হলেও, এখানকার অধিকাংশ জনগোষ্ঠী মুসলিম-হিন্দু ধর্মাবলম্বী। বিদ্যালয়ের ভবন সংখ্যা ০৩ টি। শিক্ষক ০৯ জন এবং ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা ৫৮২ জন। মিজ পূর্ণিমা রানী দে, এ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেছেন। জনাব আব্দুল গফুর বিগত ৩ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।বিদ্যালয়টি অত্র উপজেলার অন্যতম একটি ভাল প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের প্রায় সকল প্রতিযোগিতা এবং অনুষ্ঠানাদিতে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করে থাকে এবং কৃতিত্ব প্রদর্শন করে আসছে।প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করে থাকে। ২০১৪ সালে এ বিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে; ৮ জন টেলেন্টপুলে ও ৪ জন সাধারণ গ্রেডে।
নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা এবং  অবকাঠামোগত অবস্থা: বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনাগত বিবেচনায় ভাল অবস্থানে আছে।তবে তাঁদের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।
-বিদ্যালেয়টির ০৩ টি ভবনের মধ্যে একটি ভাল আছে। অন্য ০২ টি ভবন পূণনির্মাণ বা মেরামত করা প্রয়োজন।
-বিদ্যালয়টির অবস্থান জন বসতির মধ্যে হওয়ায় খোলা-মেলা পরিবেশ, খেলার মাঠ এবং পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা নেই।
-বিদ্যালয়ের সকল রেকর্ড-রেজিস্টার সংরক্ষণ এবং হালফিল রাখা হয়।
-২০১৪ সালে এ বিদ্যালয়ের এস.এম.সি ১৫ টি এবং ২০১৫ সালে ০৫ টি সভায় মিলিত হয়েছে।
-সভায় গৃহীত অধিকাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়।
-সকল সদস্য তাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন।
-বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রমে সহায়তা করে থাকেনে, এস.এম.সি।
-এস.এম.সি সভাপতি চিং রাখাইন ও অন্যান্যরা বিদ্যালয়ের কার্ক্রমে সন্তোষ্ট।
কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাবৃন্দ: অত্র বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ সবাই কর্মঠ, সক্রিয় ও যোগ্যতা সম্পন্ন। শিক্ষাথীদেরকে যত্নসহকারে পাঠদান করেন, তাঁরা।
১. পূর্ণিমা রানী দে; প্রধান শিক্ষক, এইচ.এস.সি; সি-ইন-এড
২. শাহেদা আক্তার; সহকারি শিক্ষক, এইচ.এস.সি; সি-ইন-এড
৩. রশিদা আক্তার; সহকারি শিক্ষক, বি.এ; সি-ইন-এড
৪. আব্দুল গফুর; সহকারি শিক্ষক, বি.এ; সি-ইন-এড
৫. মো: গফুর আলম; সহকারি শিক্ষক, এম.এ; সি-ইন-এড
৬. উমে; সহকারি শিক্ষক, এইচ.এস.সি; সি-ইন-এড
৭. দোলন চাঁপা; সহকারি শিক্ষক, বি.এ; সি-ইন-এড
৮ মাউ; সহকারি শিক্ষক,; এইচ.এস.সি সি-ইন-এড
৯. মর্জিনা আক্তার; সহকারি শিক্ষক, বি.এ; সি-ইন-এড
শিখন-শেখানো কার্যক্রম:
-তাঁরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন।
-পাঠদানে আন্তরিক ও সক্রিয়।
-পাঠ-পরিকল্পনা অনুসরণ করে পাঠদান করা হয়।
-উপকরণ ব্যবহার করেন।
-বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সাথে তাঁদের যোগাযোগ ভাল।
-শ্রেণি কক্ষগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন।
-সকল শিক্ষার্থীর পোশাক রয়েছে।
-শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণে মনেযোগি।
-মূল্যায়ন প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুশীলণ করা হয়ে থাকে।
-শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যকার সম্পর্ক চমৎকার।
-শিক্ষার্থীরা সক্রিয় থাকে।
-সবল-দুর্বল প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রতি দৃষ্টি দেয়া হয়।
-রাখাইন ভাষার শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হয়।
-শ্রেণি কক্ষগুলো মোটামুটি সুসজ্জিত।
-চক বোর্ড ব্যবহার করা হয়।
-শিক্ষকগণ শিখনফল জানেন।
-সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়।
-শিশুদের কাজের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়।
-ফিডব্যাক দেয়া হয়।
-শিখণ-শেখানোর কৌশলসমূহ যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয়।
-শিক্ষকগণ যোগ্যতা, প্রান্তিক যোগ্যতা, শ্রেণি ভিত্তিক যোগ্যতা, পাঠের বিষয়বস্তু ভালভাবে বুঝেন ও তা শিক্ষার্থীদেরকে অর্জন করানোর সবার্ত্নক  চেষ্টা করেন।
-প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার্থীদেরকে যোগ্যতা ভিত্তিক প্রশ্নমালার ধারণা প্রদান এবং অনুশীলণ করানো হয়।
-সম্প্রতি এ বিদ্যালয়ে লেপটপ ও মাল্টি-মিডিয়া দেয়া হয়েছে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক আছেন। আমা করা যায় মাল্টি-মিডিয়া ব্যবহার করে পাঠদান করা হবে।

উপসংহার: লিডারশীপ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণরত ২৫ জন প্রধান শিক্ষক বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে প্রশিক্ষণ কক্ষে প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করেন। ৪ টি দলের উপস্থাপিত প্রতিবেদনের আলোকে সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো।বিদ্যালয়টির সমস্যা বা দুর্বল দিকগুলো এ প্রতিবেদনমূলক নিবন্ধে তেমন উল্লেখ করা হয়নি। কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকা এবং এস.এম.সি‘র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দেয়ার জন্য পরামর্শ রইল।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন