বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৫

How to ask questions; Some techniques

প্রশ্ন করতে কী শিখতে বা শিখাতে হয়?
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ 
  সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
                             মহেশখালী, কক্সবাজার।
প্রশ্ন কী? এটা কী বুঝার কোন বিষয়? না মানব আচরণের সহজাত একটি অভ্যাস, এটি।মানব শিশু কৌতূহলী হয়, অনুসন্ধিৎসূ হয়। সর্বোপরি, প্রশ্ন করে করে শেখা বা জানা, শিশুদের জন্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রশ্ন করতে শেখাও একটি বিজ্ঞান। বিষয়টি হয়ত অনেকে হাস্যকর মনে করতে পারেন। আসলে যে প্রশ্ন যাকে করা হয়, তার মাথায় যদি তা ঝড় না তুলে, তাঁকে না ভাবায় বা গভীরে যেতে না হয়, তা শিখণ-শেখানোতে তেমন কোন কাজে আসে না; এমনটাই শিক্ষা মনোবিজ্ঞানীগণের অভিমত। বিশেষত বর্তমান কালের শিক্ষাবিদগণ মনে করেন, শিক্ষার্থীদের প্রশ্নকরণেই তাদের শিখণের বা শিখণফল অর্জনের প্রধানতম উপায় নিহীত থাকে। আমরা এখন মুখস্থকরণ, উত্তর তৈরিকরণ ও পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে গদ গদ করে মুখস্থ উত্তর লিখে দিয়ে ভাল ফলাফল করা ভাল শিক্ষার্থী প্রমাণের যুগে নেই। এখন আমরা যোগ্যতা ভিত্তিক শিখণ-শেখানো এবং যোগ্যতা ভিত্তিক মূল্যায়নের যুগে বসবাস করছি।সুতরাং লিখতে পারলেই যোগ্যতা অর্জন বা সৃজনশীল হওয়ার প্রধনতম মাপকাঠি বলে বিবেচনা করা হয় না, এখন। প্রশ্ন করতে জানবেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পরীক্ষা পরিচালনাকারি কর্তৃপক্ষ; এটাই আজকের দাবি। প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে যোগ্যতা ভিত্তিক পাঠ্য বই ব্যবহার, পঠন-পাঠন এবং শিখণ-শেখানো পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৫০ ভাগ প্রশ্ন যোগ্যতা ভিত্তিক হবে এবং মূল্যায়ন করা হবে এর আলোকে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে ১০০ ভাগ প্রশ্ন যোগ্যতা ভিত্তিক হবে। আর ক্রমান্বয়ে ১ম হতে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত, সকল শ্রেণিতে যোগ্যতা ভিত্তিক পাঠদান ও পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। অতএব, সবাইকে এ পদ্ধতি ভালভাবে রফত করে নিতে হবে। একটি উত্তম প্রশ্ন, শিক্ষার্থীদের মনকে উন্মুক্ত করে দিতে পারে, বিষয়বস্তু বুঝতে ও উত্তর পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, তা। শিক্ষকগণকে, শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তদানে সক্ষম হতে হবে। আর তাদের ভাল প্রশ্নকরণের অবাধ সুযোগ করে দিতে হবে। আমরা যদি সক্রেটিসের পদ্ধতি স্মরণ করি, তাহলে দেখতে পাব যে, তিনি তাঁর অনুসারিদেরে অবাধ প্রশ্ন করার সুযোগ দিতেন এবং বিচেনায় নিতেন যে, প্রশ্নগুলো কতটা চিন্তার উদ্রেগ করে ও ভাবায়। তিনি অনুসারিদের প্রশ্ন করতেও শিখিয়ে দিতেন। সক্রেটিস প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির মাধ্যমে পৃথিবীর তাবত সব জটিল-কঠিন বিষয় বিশ্ববাসীকে শিখিয়ে গেছেন। যাহোক, আমরা এ নিবন্ধে শিক্ষার্থীদের উত্তম প্রশ্ন করতে এবং শিক্ষকদের এ কৌশলটি আয়ত্ত করে শিক্ষার্থীদের শেখাণোর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোকপাত করব।আর প্রাথমিক শিক্ষায় যেহেতু বেন্জামিন ব্লুমের ডোমেইন অনুসারে যোগ্যতা ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তাই তাঁর ভাবনা আলোকেই বিষয়টি আলোচনা করা হবে।
১. বেন্জামিন ব্লুমের টেক্সোনমি অনুসারে প্রশ্নকরণ পদ্ধতি: প্রশ্নকরণের পদ্ধতি বিষয়বস্তু, অনুসন্ধান অথবা অন্যান্য শিখণ প্রক্রিয়াকে বিবেচনায় রেখে ব্লুমের টেক্সোনমি একটি অভীক্ষা পত্র বা প্রশ্নপত্র তৈরির মডেল হিসেবে অনুসরণ করা যেতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা পরিচালনায় ব্লুমের পদ্ধতিটি অনুসরণ করে অভীক্ষা তৈরি করে, তা ব্যবহার করে পরীক্ষা গ্রহন করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে কর্মরত শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আর বিগত ২০১২ সাল হতে এ পদ্ধতিটি অনসৃত হয়ে আসছে। বেন্জামিন ব্লুমের প্রদর্শিত পদ্ধতিতে ৬ টি জ্ঞানমূলক উপ-ক্ষেত্রের আলোকে প্রশ্নগুলো তৈরি করা হয়ে থাকে। এগুলো এখানে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো;
১. জ্ঞানমূলক: সাধারণত কোন তথ্য জানার জন্য বা পূর্বে জানা কোন জিনিষ জানার জন্য এ ধরণের প্রশ্ন করা হয়। আর প্রশ্নগুলোর উত্তরে হাঁ বা না হয়। পরিচিতি দেয়া, সংজ্ঞা দেয়া, তালিকা করা, চিহ্নিত করা, নাম বলা, বানান করা, স্মরণ করা, বর্ণনা করা, স্থানের নাম বলা, তারিখ বা সময় বলা, ব্যক্তির নাম, বস্তুর নাম জানতে চাওয়ার জন্য জ্ঞানমূলক প্রশ্ন করা হয়। যেমন-ঢাকা কোন দেশের রাজধানী?
কে, কী, কোথায়, কখন, কীভাবে, বর্ণনা কর, সেটা কী; এসব ডব্লিউ এইচ প্রশ্ন চিহ্ন ব্যবহার করে সাধারণত জ্ঞানমূলক প্রশ্ন করা হয়।                                                                                                                                                                                                                                                                                 
২. অনুধাবনমূলক: কোন পাঠ্যংশে সরাসরি তথ্য বা উত্তর দেয়া নেই, চিন্তা করে ভেবে-চিন্তে উত্তর দিতে বের করতে হয়, এমন সব প্রশ্ন অনুধাবনমূলক হয়। রূপান্তর করা, ব্যাখ্যা করা, সাজানো, পুণরায় বলা, সারমর্ম তৈরি করা, নিজের ভাষায় পুণরায় বলা, পুণরায় লেখা,                                                                                                                                                           অনুবাদ করা, ভাষান্তর করা, চিন্তা করা, কারণ খোঁজা প্রভৃতি কিয়া পদ; এধরণের প্রশ্নে থাকে।যেমন-ঢাকার ঘাস সাদা কেন?
৩. প্রয়োগমূলক: শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট পাঠ্য বিষয়বস্তুতে পড়েছে বা জেনেছে এমন বিষয়কে বাস্তব উদাহারনের সহোয্যে প্রকাশ করতে পারার দক্ষতা এটি। প্রয়োগ করা, সমাপন করা, গঠন করা, আকাঁ, খোঁজে বের করা, উদাহারণ দেয়া, সমাধান করা, ব্যবহার করা, তুলনা করা, মিল করা, সমাধান বের করা; এধরণের ক্রিয়া পদ দিয়ে প্রয়োগমূলক প্রশ্ন করা হয়, যা সরাসরি পাঠ্যাংশে থাকেনা। যেমন- বনজ ও ফলজ গাছের শ্রেণিকরণ কর।
. বিশ্লেষণমূলক: কোন জিনিষ বা বিষয়কে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে মূল জিনিষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার প্রক্রিয়া হলো বিশ্লেষণমুলক প্রশ্ন। শ্রেনীকরণ, আলাদাকরণ, বাদ দেয়া, পার্থক্য নির্ণয় করা, সুনির্দিষ্ট করা, পরীক্ষা করা, সামন্জস্য খোঁজা প্রভৃতি বিশ্লেষণমূলক প্রশ্নে পাওয়া যায়। যেমন-৫টি কলার দাম ১০ টাকা হলে, ৫ টি কলার দাম কত?
৫. সংশ্লেষণমূলক: ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত কোন জিনিষকে একত্রীকরণ করা ও তাতের মধ্যকার সম্পর্ক খোঁজা এধরণের প্রশ্নের বৈশিষ্ট্য। এধরণের প্রশ্নে পরিবর্তন কর, সংযুক্ত কর, নির্মাণ কর, সৃষ্টি কর, নকশা কর, গঠন কর, পরিকল্পনা কর, ভবিষ্যত বাণী কর, ভান বর, পুণর্বিন্যাস কর, দৃশ্যমান কর পরামর্শ দাও; প্রভৃতি ক্রিয়াপদ ব্যবহার করা য়ে এতে।যেমন-প্রদত্ত সুত্র ব্যবহার করে একটি অনুচ্ছেদ রচনা কর।
৬. মূল্যায়নমূলক: সাধারণত কোন ব্যক্তি বা জিনিষের সাথে অন্য ব্যক্তি বা জিনিষের তুলনামূলক মিল-অমিল খোঁজা; এধরণের প্রশ্নে পরিলক্ষিত হয়।বাছাই কর, তুলনা কর, সমাপন কর, সিদ্ধান্ত নাও, বিচার কর, বাছাই কর সমর্থন কর; প্রভৃতি ক্রিয়া পদ প্রয়োগ করে এতে প্রশ্ন করা হয়। যেমন-নারী উন্নয়নে বেগম রোকেয়া এবং সুফিয়া কামালের মধ্যে কার অবদান বেশি?

সাধারণত মনে করা হয় যে, উপরোক্ত ৬টি ধাপ অনুসরণ করে একটি প্রশ্নপত্র তৈরি করা হলে সহজ থেকে কঠিন, আবার কঠিন থেকে সহজ; সব ধরণের মানসম্মত প্রশ্ন এতে চলে আসে। আর শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা পরিমাপে পুরপূর্ণতা লাভ করে। শিক্ষার্থীদের সকল ধরণের যোগ্যতা বা শিখণ ফল অর্জনের মাত্রা মূল্যায়ন যথাযথ হয়।
২. সক্রেটিসের প্রশ্নকরণ পদ্ধতি: সক্রেটিসের পদ্ধতিতে মূলত শিক্ষার্থীদের দলীয় ভিত্তিতে প্রশ্ন করে করে শেখার প্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়। এটাকে সক্রেটিসের সংলাপ বা সেমিনার পদ্ধতিও বলা হয়।এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের দল গঠন করে দিয়ে তারা নিজেদের মাঝে প্রশ্ন করবে, শিক্ষককে প্রশ্ন করবে, শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে প্রশ্ন করবে;    এভাবে শিখণ-শেখানো চলবে। মূল্যায়ন চলবে। পাঠ্য বইয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু বা পাঠ্যাংশ হতে পড়তে পড়তে প্রশ্ন বের করবে এবং উত্তর বের করবে। পরিশেষে সঠিক ও যথার্থ উত্তর খুঁজে নেবে।সক্রেটিসের এ পদ্ধতিতে শিক্ষাদান ও শিক্ষাগ্রহণের মধ্য দিয়ে তত্ত্ব গঠন, পুণরাবৃত্তি এবং সত্যটা বেরিয়ে আসে। এটি একটি অনুসন্ধানমূলক শিখণ পদ্ধতিও।
৩. পাইয়েডিয়া সেমিনার পদ্ধতি: এটা অনেকটা সক্রেটিসের পদ্ধতির মত। এতে সাধারণত পুরো একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে, সহপাঠী শিক্ষার্থীদেরকে প্রশ্ন করতে করতে শিখণফল অর্জন করবে।মূল্যায়নও চলবে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদেরকে তাত্ত্বিক বা জটিল কোন বিষয়ে ভাবতে ও সহযোগিতামূলক শিখণকে উৎসাহিত করা হয়। এখানে শিক্ষকের ভূমিকা খূব কম থাকে, ১০ শতাংশ মাত্র।
৪. প্রশ্ন গেম পদ্ধতি: বিভিন্ন রকম ধাঁধা বা পপ্রশ্ন গেম দিয়ে শিশুদের শেখানোর পদ্ধতি এটি। বলা যায়, কুইজ পদ্ধতি এটি।এতে শিশুদের মনে প্রশ্নের উদ্রেগ করার প্রকিয়াকে দৃষ্টিপাত করা হয়। সমস্যা-সমাধানমূলক শিখণ চলাকালে এটা প্রয়োগ করা হয়। বিকল্প সৃজনশীল উত্তর বের করে আনতে এটা সবচেয়ে কার্যকর। কোন শিখণের পুণরাবৃত্তি, ভাবনার কাঠামোগত রূপদান এবং সৃজনশীল হয়ে ওঠতে শিশুদের জন্য প্রশ্ন গেম সহায়ক হয়।
৫. টিচ-থট পদ্ধতি: টিচ-থট নামক একটি মার্কিন জনপ্রিয় শিক্ষামূলক ওয়েভসাইট, প্রশ্নকরণের এ পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করেছে।
-কোন জিনিষ কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে কার্য়কর-ভানামূলক চিন্তার প্রকাশ।
-ভাবুকগণ কীভাবে কোন জিনিষকে অন্য কিছুর সাথে সম্পৃক্ত করেন, তা হনে নিজস্ব অনুভূতির জন্ম দেয়া।
-কোন জিনিষকে সৃজনশীল ভাবনায় পরিণত করার প্রক্রিয়া বা সনাতন নয় এমন কোন কিছুর অন্তর্নীহিতার্থ অর্থ নিয়ে ভাবা।
-কোন কিছুর একক অংশকে অংশ বিশেষ দিয়ে বিবেচনা করা।
-কোন জিনিষ কীভাবে অন্য জিনিষকে সম্পর্কিত করে নেয়, তার মধ্যকার আন্তনির্ভরতাকে নিরীক্ষাকরণ।
-পুরো জিনিষটাকে ভাবনায় নিয়ে এসে প্রাসঙ্গিকভাবে বিবেচনা করা।
৬. কোয়েশ্চন ফরমেশন বা প্রশ্ন গঠন পদ্ধতি: এটা এমন এক প্রশ্নকরণ পদ্ধতি, যেটা কোন শিখণবস্তুকে কেন্দ্র করে মস্তিস্কে ঝড় তোলার প্রক্রিয়ায় প্রশ্নকরণ ও শিখণ প্রচেষ্টা। শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রশ্ন জাগ্রত হয়, তাদের প্রশ্ন তৈরি করেন এবং কৌশল ঠিক করে প্রশ্ন করে করে শিখে। ফলে, তাদের জ্ঞানমূলক ভাবনা, সৃষ্টি তাদের চিন্তা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, এতে। এধরণের প্রশ্নের প্রক্রিয়াট নিন্মরূপ হতে পারে;
.          নিজে প্রশ্ন নিজে তৈরি করা।
.          প্রশ্নটিকে উন্নত রূপদান।
.          প্রশ্নগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ।
প্রথম ধাপে উক্ত ৩টি কৌশল অনুসৃত হবে। শিক্ষার্থীদের মনে অনেক প্রশ্নের উদ্রেগ হবে। আর যত প্রশ্ন তাদের মনে আসবে, তত প্রশ্ন করবে। আলোচনাও চলতে থাকবে, সেটা বিবেচনায় নেয়া বা প্রশ্নের উত্তর সাথে সাথে দেয়া হবে না। আর প্রত্যেক প্রশ্ন লিখে রাখা হবে। যে কোন বক্তব্যকে প্রশ্নে পরিণত করা হবে।প্রশ্নগুলোকে শ্রেণিকরণ করে বদ্ধ অথবা উন্মুক্ত প্রশ্নরূপে বেছে নেয়া হবে। বদ্ধ প্রশ্নগুলোর উত্তর হাঁ বা না দিয়ে দেয়া যেতে পারে। উন্মুক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরদানে সময় প্রয়োজন হবে।
৭.ইউরিভার্সেল কোয়েশ্চন স্টেম্স বা সার্বজনীন প্রশ্ন স্টেম: বেন্জামিন ব্লুমের প্রশ্ন তৈরি পদ্ধতিতে প্রদর্শিত বাক্যাংশ এবং প্রশ্নাংশ ব্যবহার করে প্রশ্ন তৈরিতে শিক্ষার্থীরা আনন্দ পায়, বেশ।আসলে এটি প্রথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী।উপরের স্তরের জন্য তেমন কার্যকর নয়।

৮.বেসিক কোয়েশ্চন স্টেম বা মৌলিক প্রশ্নাংশের উদাহারণ;

-কলম ও পেন্সিল; এ দু‘য়ের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কী?তুমি কোনটি পছন্দ কর?

–কেন তুমি ভাল বইকে পছন্দ কর, খারাপ বই কেন তোমার পড়তে ইচ্ছে হয় না?

–নিয়মিত বিদ্যালয়ে না গেলে তোমার পড়াশোনায় কীভাবে ক্ষতি হয়?

–কলম দিয়ে কীভাবে লিখতে হয়?

–তোমার জীবনে সবচেয়ে কোন জিনিষটি গুরুত্বপূর্ণ?

– তোমার নিকট কোন বিষয়টি সবচেয়ে সহজ বা কোনটি বেশি কঠিন মনে হয়?

–কোন বিষয়টি  তুমি সহজে বুঝতে পার? কেন পার, কারণ উল্লেখ কর।

–তুমি কখন বিদ্যালয়ে যাও? কেন যাও?

উপরোক্ত ৮ টি কৌশলে প্রশ্ন করা হলে তা হয় শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেষ্ঠ প্রশ্ন।আর এধরণের প্রশ্নকরণ প্রক্রিয়া সার্বজনীনভাবে চলে আসছে।
৯. শ্রেণি পাঠদান চলাকালে প্রশ্নকরণ:শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের শিখণ-শেখানো চলাকালে সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং পাঠ্য বিষয়বস্তু ও পাঠ্যংশ সম্পর্কিত বা অনুরূপ বিষয়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কৌশলে প্রশ্ন করা হবে। প্রশ্ন করবে শিক্ষার্থী শিক্ষককে। আবার শিক্ষক, শিক্ষার্থীদেরকে প্রশ্ন করবেন। শিক্ষার্থীরা পরস্পরে পরস্পরকে প্রশ্ন করবে। উদ্দেশ্য থাকবে, শুধু মূল্যাযন করা নয়, শিখণ ফল অর্জন করাও।সাধারণ একটি দৃশ্য এটি, শ্রেণিকক্ষে যা সবসময় চলে।তবে সাধারণকে অসাধারণ করে তোলাই মূল বিবেচ্য বিষয়, বৈ কি!কিন্তু কখনও কখনও যখন বিষয় বা শিখণ ফল যখন হয়, গভীর ভাবনামূলক, অনুসন্ধানমূলক এবং বুঝতে হয় এমন, তখন প্রশ্ন করার সময় শিক্ষকের বা শিক্ষার্থীর কৌশলী হওয়ার প্রসংগটি চলে আসে। শিক্ষার্থীদেরকে নির্বীগ্নে ও অবাধে প্রশ্ন করতে দিলেই কোন কিছুর গভীরে যাওয়ার সুযোগ সৃস্টি হয়।আর সহজাতভাবেই শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করে ও শিখে থাকে । শুধু শিক্ষক লক্ষ্য রাখবেন, প্রশ্নগুলো তাদের শিখণ ফল অর্জনে কতটা সহায়ক হচ্ছে। অনেক সময় প্রশ্ন করতে পারাটা উত্তর দেয়ার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।আর যেহেতু এটা শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক একটি শিখণ পদ্ধতি এটাকে যত্নসহকারে এবং কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা উচিত।  

 যাহোক, এভাবে প্রশ্ন বা অভীক্ষা পদ বা অভীক্ষাপত্র তৈরির অনেক পদ্ধতি অনুসরণের ব্যাপারে শিক্ষাবিদগণ মতামত ব্যক্ত করেছেন।েএখানে সংক্ষেপে প্রশ্ন করা বা অভীক্ষা পদ এবং অভীক্ষাপত্র/প্রশ্নপত্র তৈরিকরণ নিয়ে বিবিধ পদ্ধতি এবং উত্তম প্রশ্ন করার কলা-কৌশলসমূহ আলোচনা করা হলো।আশা করি, প্রশ্ন তৈরি বা শিখণ-শেখানোর অংশ হিসেবে প্রশ্নকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা লাভবান হবেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন