যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা ও মূল্যায়নঃ
একটি পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবতার চিত্র
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
মহেশখালী, কক্সবাজার।
প্রাথমিক
শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিখন ফল অর্জন নিশ্চিত করার জন্য যোগ্যতা ভিত্তিক
শিখন-শেখানো পদ্ধতি একটি বিশাল উদ্যোগ। যেহেতু এ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও
নিজস্বতার বহি:প্রকাশ ঘটানোর সুযোগ থাকে এবং শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে
সহায়ক ও বাস্তবসম্মত, তাই সবার জন্য শিক্ষার লক্ষ্য অর্জন, উন্নত প্রাথমিক শিক্ষা
নিশ্চিতকরণে এটি একটি অন্যতম কার্যকর উদ্যোগ। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন
দক্ষতা অর্জনের সাফল্যে প্রতিফলন ঘটবে। যোগ্যতা ভিত্তিক শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ায়
শিক্ষার্থীদের নিজেদের ও সমাজে তারা কী শিখে এবং কী করবে; তার আচরণিক এবং
প্রত্যাশার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। মানসম্মত শিখনে নিন্মোক্ত দিকগুলো বিবেচনা করা
হয়; যেমন- পঠন-পাঠন ও গাণিতিক জ্ঞান, জীবন দক্ষতা, স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক দক্ষতা
প্রভৃতি। যেহেতু, যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষাক্রম, প্রাথমিক শিক্ষা
কার্যক্রমের সর্বক্ষেত্রে, (যেমন- পাঠ্য বই, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন); প্রতিফলিত
হবে, এটা নির্ধারণ করা প্রয়োজন যে, একজন শিক্ষার্থী প্রতি শ্রেণিতে এবং প্রাথমিক
শিক্ষা চক্র সমাপনান্তে কি যোগ্যতা অর্জন করবে। তাই যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক
শিক্ষা; শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শ্রেণি ভিত্তিক যোগ্যতার ওপর বিষয়বস্তু নির্ধারণ
করে নিতে হবে। অধিকন্তু, শিক্ষার্থীদের শিখন ফল মূল্যায়ন করতে হবে অর্জিত যোগ্যতার
ভিত্তিতে। অতএব, শিক্ষকদেরকে এ জন্য প্রস্তুত করে তুলতে হবে এবং শিক্ষকদেরকে
প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বর্তমান প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে যোগ্যতা ভিত্তিক শ্রেণি পাঠদান,
শিখন ফল অর্জন করানো এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার আলোকে পরিবর্তন সাধন করতে হবে।
যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষার ধারণা: সাধারণভাবে যোগ্যতা বলতে কোন বিশেষ কাজ যথাযথভাবে
সম্পাদনের জন্য কারও প্রয়োজনীয় মানসম্মত সামর্থ্যকে বুঝায়। শিক্ষাগত যোগ্যতার
উদ্দেশ্য হলো; মানব সন্তানের বিশেষ দক্ষতা অর্জন। এটা আসলে, জ্ঞান, দক্ষতা ও
দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বিত রূপ। আশা করা যায় যে, শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি;
পড়া, লেখা, হিসাব কষা, চিন্তা, সংশ্লেষণ, বিশ্লেষণ, শোনা, উপস্থাপন করা, নির্দেশনা
দান, মূল্যায়ন, তুলানাকরণ, প্রয়োগ ক্ষমতায় প্রতিফলন ঘটবে। যোগ্যতাগুলো অর্জনের
জন্য ধাপে ধাপে ব্যবস্থা থাকবে। যোগ্যতা ভিত্তিক শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গহুলো
হলো; প্রান্তিক ও শ্রেণিভিত্তিক অর্জন উপযোগি যোগ্যতাসমূহ্। প্রত্যেক শিক্ষা স্তরের
একটি নির্দিষ্ট সময়কাল থাকে। বাংলাদেশে ৫ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা স্তর চালু রয়েছে।
এ ৫ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণকালে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে কতগুলো সুনির্দিষ্ট
যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। যেগুলোকে বলা হয়, আবশ্যকীয শিখনক্রম।এ পাঁচ বছরের শিক্ষা
গ্রহনকালীন সময়ে একজন শিক্ষার্থী কি শিখবে, তা সুনির্দিষ্ট। আর এগুলো হলো,
প্রান্তিক যোগ্যতা, যেমন- একটি শিক্ষার্থী গল্প পড়তে পারেবে, এটি একটি প্রান্তিক
যোগ্যতা। একইভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী সাধারণ বাক্য পড়তে পারবে। এগুলো
পদ্ধতিগতভাবে হতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা এসব প্রান্তিক যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
তারা প্রথম শ্রেণিতে কিছু যোগ্যতা অর্জন করবে, দ্বিতীয় শ্রেণিতে আরও কিছু যোগ্যতা
অর্জন করবে এবং অনুরূপভাবে ৫ম শ্রেণি শেষে ২৯ টি নির্ধারিত প্রান্তিক যোগ্যতার
সবগুলো অর্জন করবে।পাঁচ বছরের প্রাথমিক সশিক্ষা সমাপন করে শিক্ষার্থীরা যে সকল
যোগ্যতা অর্জন করবে, সেগুলোকে প্রাথমিক শিক্ষার প্রান্তিক যোগ্যতা বলে অভিহিত করা
হয়। প্রত্যেক শ্রেণিতে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে এবং সেগুলোকে বলা হয়
শ্রেণিভিত্তিক অর্জন উপযোগি যোগ্যতা।
যোগ্যতার বৈশিষ্ট্যসমূহ: যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য
রয়েছে।এক কথায় এটাকে সহজ করে ইংরেজি SMART শব্দের মাধ্যমে ব্যাখা করা যেতে পারে।
অর্থাৎ
S-Specific,
M-Measurable, A-Achievable, R-Realistic, T-Time bound।
১.
স্পেসিফিক বা সুনির্দিষ্ট: একটা পাঠ
হতে শিক্ষার্থী কী শিখবে, তা সুস্পষ্ট হবে। যেমন- কীটনাশক ব্যবহারের বিরূপ প্রভাব
শিক্ষার্থীরা শিখবে।
২.
মিজারেবল বা পরিমাপযোগ্য: সকল যোগ্যতা
পরিমাপযোগ্য হবে। যেমন- শিক্ষার্থীরা নারীর আইনগত অধিকারের ৩ টি ধারা শিখবে।
৩.
এচিভেবল বা অর্জনযোগ্য: সকল যোগ্যতা অর্জনযোগ্য
হবে। যেমন- শিক্ষার্থীরা সেতু নির্মাণের ১০ টি উপাদানের নাম বলতে পারবে। আর যদি
বলা হয়, শিক্ষার্থীরা একটি সেতু নির্মাণ করবে, তবে তা অর্জনযোগ্য হবে না।
৪.রিয়েলিস্টিক বা বাস্তধর্মী হবে: সকল যোগ্যতা
হবে বাস্তবধর্মী। যেমন- শিক্ষার্থীরা সত্য কথা বলার ১০ টি উপকারিতা বলতে পারবে।
কিন্তু শিক্ষার্থীরা জীবনব্যাপী শিথ্যা কথা বলবে না, এমনটা হলে, তা বাস্তবধর্মী
হবে না।
৫. টাইম-বাউন্ড বা সময়সীমা নির্ধারণ করা থাকবে:
যোগ্যতা অর্জনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা থাকবে।
যোগ্যতা
ভিত্তিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে, শিক্ষকদেরকে প্রস্তুত করে তুলতে হবে এবং শিক্ষার্থীদেরকে
যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে মূল্যায়ন করতে হবে।তাই, প্রাথমিক শিক্ষায় বর্তমানে
অনুসৃত কিছু বিষয়ে পরিবর্তন সাধন করতে হবে। সুতরাং শ্রেণি কক্ষে যোগ্যতা ভিত্তিক
পদ্ধতিতে পাঠদান করতে এবং শিক্ষার্থীদেরকে মূল্যায়ন করতে এ যোগ্যতা ভিত্তিক শিক্ষা
পদ্ধতির জন্য প্রস্তুত করে তুলতে বা উপযোগি করে নিতে হবে। এখানে যোগ্যতা ভিত্তিক
প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণ দান এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে
এ নিবন্ধে আলোকপাত করা হলো।
যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষার জন্য
শিক্ষক প্রশিক্ষণ: মানসম্মত প্রাথমিক
শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষকগণ
হলেন, মূল চালিকাশক্তি। শিক্ষকদের কাজ
হলো, পাঠ্য বই হতে জ্ঞান বিস্তরণ এবং শিক্ষার্থীদের অর্জিত শিখণ ফলের মাত্রা
যাচাইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করা। শিক্ষকদের কার্যকর
শিখন-শেখানো কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় কাজ করে; যেমন-
শিক্ষকদের পাঠদানের মান, যার দ্বারা শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতা চিহ্নিত করতে পারেন
কিনা, পূর্ব জ্ঞান, বিভিন্ন শিখণ মাত্রা, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও আচরণগতভাবে
উদ্বুদ্ধকরণ এবং কৌতূহল জাগ্রতকরণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পরিস্থিতি, উপকরণ ব্যবহার, সময়ের
সঠিক ব্যবহার এবং শিক্ষার্থীদেরকে শিখনে নিয়োজিত রাখা। শিক্ষকতা; সাফলের সাথে করতে
হলে শিক্ষকদের জন্য চাকুরিপূর্ব এবং চাকুরিকালীন প্রশিক্ষণ গ্রহন অপরিহার্য।
চাকুরি পূর্ব শিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হবে, শিক্ষাক্রম, এর লক্ষ্য, পদ্ধতি এবং
মূল্যায়ন কৌশল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা। তাছাড়া, শিক্ষকগণ আরও জানবেন, শ্রেণি
ব্যবস্থাপনা কৌশলসমূহ এবং চাকুরি পূর্ব প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে শিক্ষকগণ, শিক্ষার্থীদের
পাঠদানের সুযোগ পাবেন। চাকুরিকালীন পেশাগত প্রশিক্ষণে শিক্ষকগণ; তাঁদের দক্ষতা
উন্নয়নের সুযোগ পাবেন ও পাঠদানকালে সাধারণত তাঁরা যেসব সমস্যা মোকাবেলা করেন, তা
জানবেন। বর্তমানে শিক্ষকদের পাঠদানকালে কিছু সমস্যায় পড়তে হয়; যথা- পাঠ্য বই কেন্দ্রিক,
পরোক্ষ এবং বক্তৃতা পদ্ধতিতে শিক্ষাদান, দুর্বল উপস্থাপনা, অনমনীয়তা, অতি
তাত্ত্বিক আলোচনা, শিক্ষাক্রম ও বাস্তব পাঠদানের মধ্যকার সম্পর্ক স্থাপনে
ব্যর্থতা। আরও উল্লেখ্য যে, চাকুরিপূর্ব প্রশিক্ষণে শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির
চেয়ে তথ্য সংগ্রহের উপর জোর দেয়া হয়, বেশি।আর শিক্ষকদের কার্যকর ও উদ্ভাবনী আচরণের
জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রকৃত চাহিদার মাঝে গ্যাপ থেকে যায়। শিক্ষকদের চাকুরিপূর্ব এবং
চাকুরীকালীন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এমনভাবে সাজাতে হবে যে, শিক্ষকগণ যোগ্যতা ভিত্তিক
প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ও পদ্ধতিগুলো বুঝতে সক্ষম হবেন। তাদেরকে শ্রেণি ভিত্তিক
অর্জন উপযোগি যোগ্যতা এবং প্রান্তিক যোগ্যতাসমূহ বুঝতে সক্ষম হতে হবে। পাঠ
উপস্থাপনের সময় তাদেরকে পাঠের শিখণ ফল সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করে নিতে হবে। তাদেরকে
শিক্ষার্থীদের পূর্বে অর্জিত যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।
যোগ্যতা ভিত্তিক শিক্ষার জন্য মূল্যায়ন
প্রক্রিয়া: কার্যকর যোগ্যতা ভিত্তিক
প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের জন্য মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা অপরিহার্য। শিক্ষার্থীদের
প্রান্তিক যোগ্যতা অর্জনের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য শ্রেণিভিত্তিক অর্জন উপযোগি
যোগ্যতাকে বিবেচনায় রাখতে হয়, তাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিয়মিত মূল্যায়ন করা
প্রয়োজন। শিকর্থীদের মূল্যায়নের উদ্দেশ্য হবে, তাদের যোগ্যতা অর্জনকে যাচাই করা।
যেমন- এ যোগ্যতা ভিত্তিক মূলল্যায়ন প্রক্রিয়ায় একটি পাঠ্যাংশ পড়ে অনুরূপ পঠন-পাঠন
সংবলিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দানে সক্ষম হবে, শিক্ষার্থীরা। এতে
মুখস্থকরণকে নিরুৎসহিত করা হয় এবং শুধু জ্ঞানমূলক প্রশ্ন করা হয় না।
যোগ্যতা বিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষার
প্রতিবন্ধকতাসমূহ: যোগ্যতা ভিত্তিক
পাঠদান ও মূল্যায়ন/পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষকগণ নিন্মোক্ত সমস্যসমূহ
মোকাবেলা করে থাকেন।
.
১.যেহেতু এটি
একটি নতুন পদ্ধতি; যোগ্যতা ভিত্তিক শিখণ-শেখানোর ধারণাটি আত্নস্থ করে নিতে বেশ সময়
সাপেক্ষ ব্যাপার। শিক্ষকগণকে পাঠের উদ্দেশ্য ও শিখণ ফলকে সুনির্দিষ্ট করে নিতে
হবে। পূর্বের ন্যায় বক্তৃতা পদ্ধতিতে পাঠদানের পরিবর্তে পাঠ্য বিষয়বস্তুর আলোকে
পাঠদান করতে হবে।
.
২. শিক্ষকদের
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। যোগ্যতা ভিত্তিক পদ্ধতিকে এসব
কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করে নিতে হবে এবং শিক্ষকদেরকে সেভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
আর বেশ কিছু শিক্ষক আছেন, যাঁরা অনেক পূর্বে পেশাগত প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন, তাঁরা
এসব ধ্যান-ধারণার সাথে পরিচিত নন।
.
৩. যোগ্যতা
ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষায় চিরাচরিত মূল্যায়ন বা পরীক্ষা গ্রহন পদ্ধতি হতে যোগ্যতা
ভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা ভিন্নধর্মী।। সহজাতভাবেই, অনেক দেশেই মুখস্থকরণ বা
মুখস্থ করে পরীক্ষা দেয়ার পদ্ধতি প্রচলন ছিল।কাজেই, যোগ্যতা ভিত্তিক শিক্ষা
পদ্ধতিতে মুখস্থকরণ ও শুধু জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিকে অনুমোদন করা হয় না। এতে
বরং যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনের ওপর জোর দেয়া হয়। তাই, শিক্ষকদেরকে নতুন এ পদ্ধতি
অনুশীলণের জন্য প্রস্তুত করে তুলতে হবে।
.
৪. সকল শিক্ষার্থীর
যোগ্যতা অর্জন নিশ্চিত করতে হলে, নিয়মিত রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। কারণ প্রান্তিক
যোগ্যতা অর্জন হয়, শ্রেণিভিত্কি অর্জন উপযোগি যোগ্যতাগুলো অর্জন করে ধাপে ধাপে
অর্জন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আবার, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতে বিরাট পার্থক্যও এ
পদ্ধতি বাস্তবায়নে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।
উপসংহার:
প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে যোগ্যতা ভিত্তিক শিখণ-শেখানো এবং পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ে উপরে
আলোচনা করাপ হয়েছে।বিষয়গুলো নিয়ে বিগত ৩/৪ বছর ধরে বেশ আলোচনা চলছে এবং শিক্ষকগণকে
সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। অধিকাংশ
শিক্ষক এখনও বিষয়টি বুঝে ওঠতে পারছেন না। আসলে এটা একদিন/দুদিন প্রশিক্ষণ
নিয়ে আয়ত্ত্ব করা সম্ভবপর হবে না।
শিক্ষকদেরকে নিত্যই যোগ্যতা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে পড়তে ও অনুশীলণ করতে
হবে। ইতোপূর্বে বর্তমান নিবন্ধকার বেনজামিন ব্লুম এবং যোগ্যতা ভিত্তিক মূল্যায়ন এ
শিরোনামে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আগ্রহী পাঠকগণ দু‘টি নিবন্ধ মিলিয়ে পড়লে বেশ
উপকৃত হবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন