বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৫

Poschim Fakiraghuna GPS Inspection on 08/04/2015

পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
                             মহেশখালী, কক্সবাজার।
পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নে অবস্থিত। মহেশখালী উপজেলা সদর হতে ৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে কালারমারছড়া যাওয়ার পথে নতুনবাজার এলাকার পর পর।পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির বর্তমান কার্যক্রম ভাল এবং বিগত বছরগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে ভাল করে আসছে। বর্তমান প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ শাহজাহান একজন কর্মঠ ও অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষক। তিনি শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায় এবং পেশাজীবীসুলভ আন্দোলনের একজন সক্রিয়-নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব।তাঁর বিদ্যালয়টিতে অনেক সমস্যা আছে। কর্মরত শিক্ষকগণ কর্মঠ, যোগ্যতাসম্পন্ন ও নিষ্ঠাবান। তাঁদের সবার উচিত আরও সক্রিয় হয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাওয়া।
কর্মরত শিক্ষকমন্ডলী: পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষক পদ সংখ্যা ০৯ জন। কর্মরত আছেন ০৯ জন।কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ হলেন;
ক্রমিক নং
শিক্ষক/শিক্ষিকার নাম
পদবী
শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতা
মন্তব্য
০১
মোহাম্মদ শাহজাহান
প্রধান শিক্ষক
বি.এ; বি-এড, সি-ইন-এড

০২
মুহাম্মদ ছরওয়ার           আলম
সহকারি শিক্ষক
বি.এস.সি; সি-ইন-এড

০৩
মোহাম্মদ ইসমাইল
সহকারি শিক্ষক
বি.এস.সি; সি-ইন-এড

০৪
শুক্লা প্রভা দত্ত
সহকারি শিক্ষক
বি.এস.সি(অনার্স);সি-ইন-এড

০৫
গিয়াস উদ্দিন
সহকারি শিক্ষক
এম.কম; সি-ইন-এড

০৬
সোলতানারা বেগম
সহকারি শিক্ষক
এইচ.এস.সি.; সি-ইন-এড

০৭
চম্পা বড়ুয়া
সহকারি শিক্ষক
বি.বি.এস; ডি.পি-এড

০৮
পারভীন আক্তার
সহকারি শিক্ষক
এইচ.এস.সি; ডি.পি-এড

০৯
রাহেলা আক্তার
সহকারি শিক্ষক(প্রাক-প্রাথমিক)
এইচ.এস.সি

পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষকাগণের তালিকার দিকে এক পলক থাকালে বুঝা যায়, তাঁরা সকলেই প্রাতিষ্ঠানিক ও পেশাগত বিবেচনায় যোগ্য শিক্ষক। পেশাগত জ্ঞান, পেশাগত অনুশীলণ ও পেশাগত মূল্যবোধ; এ ৩টি শিক্ষক যোগ্যতার মাপকাটিতেও তাঁরা ভাল।তাঁদের সবার উচিত পেশাগত যোগ্যতা উন্নয়নের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া। ১ম-৫ম শ্রেণি পর্যন্ত সকল বিষয়ে পাঠ দানের জন্য নিজেদেরকে উপযুক্ত ও যোগ্য করে তুলতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, তাঁদেরকে।
ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা: ২০১৫ সালে অত্র বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা ৫৮৮ জন।এদের মধ্যে, বালক- ২৬৪ জন ও বালিকা-৩২৪ জন।শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৬৫ জন প্রায়।ছাত্র/ছাত্রীদের পোশাক-পরিচ্ছদ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। তারা সবাই স্কুল ড্রেস পরিহিত।

শ্রেণি
ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা
       উপস্থিতি
উপস্থিতির হার
৮২%
বালক
বালিকা
মোট
বালক
বালিকা
মোট
প্রাক-প্রাথমিক
৪০
৩১
৭১
২৯
২৯
৫৮
১ম
৬৫
৫২
১১৭
৫০
৪০
৯০
৭৭
২য়
৪৫
৬৫
১১০
৩৭
৫৬
৯৩
৮৫
৩য়
৫২
৮৬
১৩৮
৪৩
৭৭
১২০
৮৭
৪র্থ
৩২
৪৬
৭৮
২৮
৪৪
৭২
৯২
৫ম
৩০
৪৪
৭৪
২৫
৪১
৬৬
৮৯
মোট
২৬৪
৩২৪
৫৮৮
২১২
২৮৭
৪৯৯
৮৫

শিখণ-শেখানো কার্যক্রম: কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ অধিকাংশই প্রচলিত ধ্যান-ধারণার আলোকে শ্রেণি পাঠ দান কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। তাঁদের সকলকে পরিদর্শন কপির ৯ নং ক্রমিকের ক-তে উল্লেখিত পরিমাপকগুলো; যেমন-শিক্ষকের পূর্ব প্রস্তুতি, পাঠ-পরিকল্পনা অনুসরণ, শিক্ষা উপকরণের কার্যকর ব্যবহার, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাময়মূলক সহায়তা প্রদান, শিক্ষার্থীদের অনুশীলণ করার সুযোগ সৃস্টি, শ্রেণি কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, শিখন ফল অগ্রগতি যাচাই, শিক্ষকের কর্মতৎপরতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের প্রতি মনোযোগ দান প্রভৃতি অনুসরণ করে পাঠ দান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালাতে পরামর্শ দেয়া হলো।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য:
সাল
৫ম শ্রেণিতে ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রী
ডিআর-ভুক্ত ছাত্র/ছাত্রী
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারি
ছাত্র/ছাত্রী
পাশের সংখ্যা
জিপিএ-৫
বৃত্তিপ্রাপ্তির সংখ্যা
মন্তব্য
টেলেন্টপুল
সাধারণ
২০১১
৩৪
৩৪
৩১
৩১
--
--
---

২০১২
৪৫
৪৫
৪২
৩৭

--
--

২০১৩
৪৬
৪৬
৪৩
৪৩
০২
-
০২

২০১৪
৫৩
৫৩
৫২
৫২
০৪
০২
০১


রেকর্ডপত্র: অত্র বিদ্যালয়ের সকল রেকর্ড-রেজিস্টার সংরক্ষণ করা এবং হালফিল করা হয়ে থাকে।
উপবৃত্তি ও বিস্কুট বিতরণ: উপবৃত্তি বিতরণ ও বিস্কুট বিতরণ, উভয় কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
অবকাঠামো: অত্র পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ০৩ টি ভবন আছে। আর ০৯ টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে।প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসবাবপত্র নেই। ভবন ও শ্রেণিকক্ষগুলো পরিপাটি ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন।অফিস কক্ষটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং আকর্ষণীয়।আর বিদ্যালয় প্রাঙ্গনকে ঘেরা-বেড়া তৈরি করে বেষ্ঠনীতে নিয়ে এসে একটি বাগান করতে পারলে খুব ভাল হয়।
এস.এম.সি ও পিটিএ-এর কার্যক্রম: এসএমসি ও পিটিএ-র কার্যক্রম ভাল।
বিদ্যমান সমস্যা ও সমাধানসমূহ:  বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে নিন্মোক্ত কিছু সমস্যা রয়েছে।
.         বিদ্যালয়ের ঠিক সামনে একটি গাড়ি চলাচলের রাস্তা থাকায় শিক্ষার্থীদের গমনাগমন ঝুঁকিপূর্ণ।এব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে ও রাস্তা পারাপারের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে শিখিয়ে দিতে হবে।
.         শ্রেণিকক্ষ ও আসবাবপত্র স্বল্পতা।
সার্বিক পরামর্শ: পশ্চিম ফকিরাঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে সুদক্ষ শিক্ষক সম্বলিত একটি বিদ্যালয়ে পরিণত করার জন্য নিন্মে কিছু পরামর্শ দেয়া হলো।
   . প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মানসম্মত পড়াশোনা এবং মৌলিক বিষয়ে ফলপ্রসূ শিখন-শেখানোর মাধ্যমে তাদের শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে দিতে হবে।
.         একটি দীর্ঘমেয়াদী বিদ্যালয় উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করে তা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করতে হবে।
.         শ্রেণি রুটিন যথাযথাভাবে মেনে চলতে হবে।
.         প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে মানসম্মত পড়াশোনায় পারদর্শী করে তুলতে হবে।
.         বিদ্যালয়ের সময়সূচি (৯.০০-৪.৩০) কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
.         পেশাগত উন্নয়নমূলক সভা নিয়মিত আয়োজন করতে হবে।
.         বিদ্যালয় চলাকালে শিখন-শেখানো কার্যক্রমে দক্ষ হয়ে ওঠতে নানা রকম উপকরণ তৈরি, পেশাগত ভাব-বিনিময় এবং বিষয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠার জন্য প্রত্যেক শিক্ষক/শিক্ষকাকে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
.         ১ম হতে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং অভিভাবকগণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে।
.         প্রত্যেক শিক্ষককে পেশাজীবীসুলভ মনোবৃত্তি সম্পন্ন হতে হবে এবং নিয়মিত পাঠ চর্চা করতে হবে।
.         প্রত্যেক শিক্ষকের মাঝে পেশাগত প্রতিদ্বন্ধিতা থাকবে।
.         শিক্ষকগণ; যিনি যে বিষয় পড়ান বা পাঠ দান করেন, সে বিষয় ও বিষয়ে পাঠদানের যাবতীয় কলা-কৌশল আয়ত্ন করতে চেষ্টা করতে হবে।
.         বছরের প্রারম্ভ হতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার্থীদেরকে ভালভাবে বিষয়গুলো পাঠ দান করে এবং প্রশ্ন কাঠামোর সুস্পষ্ট ধারণা দিয়ে, তা বার বার অনুশীলণ করাতে হবে।
.         শিক্ষকদেরকে বিদ্যালয়ের সার্বিক নিয়ম-কানুন এবং চাকুরি বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে। আর ছুটি গ্রহনকালে বিধি-বিধান মেনে তা গ্রহন ও ছুটি ভোগ করতে হবে।
.         বিদ্যালয় কার্যক্রমে কোন প্রকার শৈথিল্য প্রদর্শন বা অবহেলা করা যাবে না।
.         কর্মরত সকল শিক্ষকের মাঝে সুসমন্বয় এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
.         সর্বোপরি, সকল শিক্ষককে বিদ্যালয়কে একটি উত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার জন্য সর্বাত্নক আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে পরামর্শ দেয়া হলো।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন