একবিংশ শতাব্দীর শিশুদের জন্য
১৬ টি প্রয়োজনীয় মানসিক অভ্যাস
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
মহেশখালী, কক্সবাজার।
শিশুরা বেড়ে ওঠে তাদের সহজাত পারিপার্শ্বিক পরিবেশের মাঝে। তাদের উপযোগি
পরিবেশ নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে।ধনী-গরিব পার্থক্য থাকতে পারে।তবে সকল শিশুর শৈশবকাল
হলো, এক আনন্দময় গড়ে ওঠার সময়।তবে আমরা বড়রা যদি তাদের যেমন চাই, তেনভাবে দেখতে
চাই, আমাদেরকে তাদের কথা ভাবতে হবে। তাদেরকে নানা কৌশলে চেষ্টা করতে হবে, তারা যেন
বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও শারীরিকভাবে একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবন পায়। সেজন্য
নিন্মোক্ত ১৬ টি মানসিক অভ্যাসে তাদেরকে অভ্যস্ত করা যেতে পারে। এগুলো তাদেরকে
কাংখিত শিশু হিসেবে পাওয়ার পথ দেখাতে পারে।
১. অধ্যবসায়
|
২. উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলা
|
৩. অন্যকে শোনা
|
৪. নমনীয় মনোভাব
|
৫. ভেবে-চিন্তে কাজ করা
|
৬. সুধরে নেয়া
|
৭. প্রশ্ন করা ও সমাধান খোঁজা
|
৮. অতীত হতে শেখা
|
৯. ভেবে নেয়া ও শুদ্ধতার সন্ধান করা
|
১০. উদারভাবে তথ্য সংগ্রহ করা
|
১১. সৃস্টি, কল্পনা ও নতুনত্ব আনয়ন
|
১২. বিস্ময় জাগা ও পুলকিত হওয়া
|
১৩. ঝুঁকিশীল দায়িত্ব বহন করা
|
১৪. রসবোধ সন্ধান করা
|
১৫. স্ককীয় ভাবনা/স্বাধীন চেতা হওয়া
|
১৬. অব্যাহত শিখনে উন্মুখ থাকা
|
১. অধ্যবসায়ের চর্চা করো: কী করতে চাও সেটা নিয়ে লেগে থাক ও
তাতে মনোনিবেশ কর। টমাস আলবা এডিশন ১০,০০০ বার ব্যর্থ হওয়ার পর তাঁর আবিস্কারে
(প্রথম বৈদ্যুকি ভাল্ব) সফল হয়েছিলেন।
২. উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলা
করতে প্রস্থুত থেকো: কোন কাজ করার আগে সময় নিয়ে ভেবে নাও। ভাব এবং উদ্ভুত
সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তুত থেকো।
৩. মন দিয়ে অন্যের কথা শোন:
অন্যদের ধ্যান-ধারণা এবং মতামতকে বুঝার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাও।
৪. নমনীয় মনোভাব পোষণ করো:
তোমার ভাবনায় নমনীয় থেকো এবং বিভিন্ন বিকল্প এবং পছন্দগুলো বেছে নিতে প্রস্তুত
থেকো।
৫. তোমার ভাবনাগুলো নিয়ে ভেবে নাও:
নিজের ভাবনা প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে সযত্ন থেকো ও তোমার কাজ-কর্ম এবং আচরণের ওপর তার
প্রভাব যাচাই করে দেখো।
৬. নিজেকে সুধরে নাও: ভালটা
পাওয়ার জন্য নিজে সর্বাত্নক সচেষ্ট থেকো এবং তা উন্নত করার পন্থার খুঁজে নিজেকে
নিয়োজিত রেখো।
৭. প্রশ্ন কর এবং সমস্যার সমাধান
খোঁজ: জিজ্ঞাসু ও অনুসন্ধিৎসু হও।কোন কিছুই নশ্বর নয় এবং ভালভাবে কোন কিছু ধারণ
করার জন্য প্রশ্ন করাই উত্তম পন্থা।
৮. অতীত হতে শিখে নাও: তোমার
বর্তমান শিখন অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে তোমার পূর্ব জ্ঞানকে যাচাই করে নাও। তোমার অজির্ত
পূর্বজ্ঞান এবং সত্যিকার শিখনের মাঝে একটি সেতু বন্ধন গড়ে তোল।
৯. ভেবে নাও ও শুদ্ধতার সন্ধান করো:
নিজস্ব যোগাযোগের পরিমন্ডল সম্পর্ক সুস্পষ্ট ধারণা রেখ এবং অতিরিক্ত সাধারণীকরণ,
অতিরঞ্জণ ও বিকৃতির ব্যাপারে সতর্ক থেকো।
১০. উদারভাবে তথ্য সংগ্রহ কর:
তথ্য সংগ্রহে তোমার সকল ভেদ-বুদ্ধি প্রয়োগ কর। তোমর চারিপাশের বিশ্বকে পর্যবেক্ষণ
করো এবং তা আবিস্কারে তোমার অনুভূতিকে কাজে লাগাও।
১১. সৃস্টি করো, কল্পনা করো এবং
নতুন কিছু উদ্ভাবন করো: নব নব নিস্কন্ঠক পথের সন্ধান করো এবং সম্ভাব্য সফল
দিকগুলো আবিস্কার করে নাও।
১২. বিস্ময়কর সব বিষয় নিজজের
মধ্যে জাগিয়ে তোল এবং পুলকিত বোধ করো: তোমার শিখণকে আনন্দদায়ক করো এবং বেশি
বেশি শেখাকে উপভোগ করো।
১৩. ঝুঁকিশীল দায়িত্ব গ্রহণ করো:
দু:সাহসী সব কাজ করার মানস গড়ে তোল এবং নিত্য নতুন জিনিষকে ধারণ করে নাও।
১৪. রসবোধ সন্ধান করো: রসিক
হও এবং মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ো, এমন সব বিষয় হতে বিরত থেকো।
১৫. স্বাধীন চেতা হতে চেষ্টা করো:
দলে কাজ করার দক্ষতা অর্জন করো এবং অন্যদের সাথে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে কাজ
করতে শিখো।
১৬. অব্যাহতভাবে শিখনে উন্মুখ
থেকো: শিখনকে কখনও বন্ধ করো না। শিখন একটি জীবনব্যাপী ভ্রমণের মত এবং তোমাকে
এটা আমৃত্যু লালন করে নিয়ে যেতে হবে।
পরিশেষে উল্লেখ করতে চাই, উপরের ১৬ টি পরামর্শ একজন একবিংশ শতাব্ধীর
শিক্ষাবিদের। আমদের বতর্মান যুগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয়গুলো খুবই উপযোগী এবং
প্রয়োজনীয়। প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের সবাইকে বলব, আপনারা এ ধরণের জিনিষগুলো শিশু
মনে জাগ্রত করুণ। তবেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীর শিখন-শেখানোর পাশাপাশি কর্মজীবনে সফল
প্রবেশের দ্বার খুলে যাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন