এক বিংশ শতাব্দীর শিখন:
কতিপয় নতুন ধ্যান-ধারণা
মোহাম্মদ
শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
মহেশখালী,
কক্সবাজার।
বিশ্বব্যাপী তথ্য-প্রযুক্তির
অভভাবনীয় বিকাশ এবং প্রয়োগ শিখন-শেখানো কার্যক্রমকে অনেক পরিবর্তন বয়ে এনেছে।
শিক্ষাবিদ, শিক্ষক ও ছাত্র/ছাত্রী সবার মাঝে নতুন নতুন ভাবনা কাজ করছে। সে আলোকে
নতুন কৌশল ও ধ্যান-ধারণার প্রচলন ঘটানো হয়েছে শিক্ষা দান ও শিক্ষা গ্রহন পদ্ধতিতে।
আজকের নিবন্ধে এমন কিছু ভাবনা তুলে ধরা হলো।
১. কর্ম তৎপরতা-কেন্দ্রিক শিখন: এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা জন সেবা,
হাতে-কলমে কাজ, গণভিত্তিক গবেষণা পরিচালনা ও শ্রেণি কার্যক্রমের সাথে বাস্তব
জীবনধর্মী কর্মকান্ড পরিচালনার ধারণা লাভ করার সুয়োগ পায়। শিক্ষা দানের
বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে ছাত্র/ছাত্রীদের তাত্বিক জ্ঞান অনুশীলণ এবং
পদ্ধতি অনুসরণ, তথ্য ব্যবহার ও বৃহত্তর বৈশ্বিক পরিবেশকে বিবেচনায় রেখে পড়াশোনার
অভিজ্ঞতা ও শিখন ফল অর্জনের সুযোগ পায়, শিক্ষার্থীরা।
২. এন্ড্রাগগি বা বয়স্ক শিখন: বয়স্ক শিশুদের বা মানুষদের শিখন-শেখানোও
আধুনিক একটি ভাবনা।
৩.শিক্ষার্থীদের নিজস্ব প্রযুক্তিজ্ঞান প্রয়োগে শিখন: শিক্ষার্থীদৈর নিকট আজকাল প্রায়
প্রত্যেকের হাতেই স্মার্ট ফোন বা টেবলেট কম্পিউটার থাকে তাদের সাথে। তারা এসব
ব্যবহারে বেশ দক্ষ ও পরিচিত। শিক্ষকগণ এসব সুবিধা কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের
কার্যকর শিখনে সহায়তা করতে পারেন। আর, শিক্ষার্থীরা শিখনের জন্য তাদের ব্যবহৃত
প্রযুক্তিকে শিখন সহায়ক কাজে লাগাতে পারে ভালভাবে।
৪. ব্লেন্ডেড বা প্রযুক্তির ব্যবহার ও মুখোমুখি শিখন: এটি এমন শিখন
পদ্ধতি বা মডেল যাতে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং মুখোমুখি শিখন অভিজ্ঞতার সম্মিলিত প্রক্রিয়া।
এতে কয়েকটি কৌশল অনুসৃত হয়ে থাকে: (১) এতে ছাত্র/ছাত্রীরা সময়, স্থান, পন্থা ও
পর্যায় বিবেচনায় অন-লাইনের সাহায্যে সরাসরি শিখন প্রক্রিয়ায় লিপ্ত হবে, (২)
শিক্ষার্থীরা নিজস্ব গন্ডির বাইরে গিয়ে মাঠে কাজ করার সুযোগ পাবে, এবং (৩) এটি
একটি কোর্স বা একটি বিষয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি যাচাই করার সুযোগ
থাকবে। ব্লেন্ডেড পদ্ধতিতে শিখনে ৪ টি পদ্ধতি অনুসৃত হয়ে থাকে। পালাক্রম, নমনীয়তা
ও উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার। আবার পালাক্রমে কাজের ধাপে স্টেশন রোটশেন, ল্যাব
রোটেশন, প্লিপ্ড ক্লাশরুম ও ব্যক্তিগত পালা এভাবে কাজ পরিচালিত হয়। তবে প্রত্যেক
স্তরে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে।
৫. চ্যালেঞ্জড বেইজড বা ঝুঁকিমূলক শিখন: এ পদ্ধতির শিখন প্রক্রিয়া হলো;
বিশ্বাসয়োগ্য উপায়ে শ্রেণিকক্ষকে একটি থিন্ক ট্যান্কে পরিণত করে সমস্যা সমাধান
করা। এটা অনেকটা গভীর বা জটিল কোন বিষয়ে শিখন ফল অর্জন করার সক্রিয় প্রচেষ্টা।
৬. কগ্নেটিভ এপ্রেন্টিসশিপ বা জ্ঞানমূলক নবীশ শিখন: জ্ঞানমূলক এবং
অর্ধ-জ্ঞানমূলক দক্ষতা অর্জন ও প্রক্রিয়ার নির্দেশিত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিখন হলো,
জ্ঞানমুলক প্রাথমিক বা নবীশী শিখন। এ পদ্ধতিটির প্রাথমিক লক্ষ্য থাকবে, সমস্যা
সমাধানমূলক শিখন প্রক্রিয়া যা বিশেষজ্ঞগণ জটিল কোন বিষয় শিখানোর ক্ষেত্রে প্রয়োগ
করে থাকেন। এর উদ্শ্যে থাকে নবীনদের তাদের বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানে নিজস্ব
গন্ডির মধ্যে ও বিশষজ্ঞ কতৃক নির্ধারিত ক্ষেত্রের প্রেক্ষিতে কৌশল এবং দক্ষতাগুলো
শিক্ষার্থীরা আয়ত্ত্ব করবে।
৭. কমিউনাল কন্সস্ট্রাক্টিভিজম বা স্থানীয় জনগণকে সম্পুক্তকরণ: এটি এমন
শিখন পদ্ধতি যাতে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব শিখন সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে শুধু তাদের
নিজস্ব জ্ঞানকে কাটামোবদ্ধ করবে না, নিজ নিজ এলাকাবাসীর মাঝে এ শিখন ফল-এর
প্রতিফলন বিলিয়ে দেবে।
৮. কনেক্টেড লার্নিং বা সংযুক্ত হয়ে শিখন: এ পদ্ধতির শিখন হলো; অন্যদের
ভাবনা, শিখন-শেখানো পদ্ধতির সাথে যুক্ত হয়ে নিজের শিখনকে সমৃদ্ধ করে তোলা। এ
পদ্ধতির বৈশিস্ট্য হলো, আগ্রহসম্পন্ন, উৎপাদনমুখি, অন্যের সহায়তাপ্রাপ্ত,
অংশিদারদিত্বমূলক, পড়াশোনা-প্রবণ ও উন্মুক্তভাবে সংযুক্ততা।
৯.কন্সস্ট্রাকশনিজম বা কাঠামোত রূপদানের মাধ্যমে শিখন: সাইমুর পাপার্ট
নামক একজন শিক্ষাবিদ এ পদ্ধতির উদ্ভাবক। প্রকাশ্য শিখন প্রকিয়া, শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক,
সরেস, অ-প্রাতিষ্ঠানিক, নন-একাডেমিক এবং একাডেমিক প্রেক্ষাপটে বর্ণনা করা যায় না, এমন
এক অব্যাহত জ্ঞান বিতরণমূলক প্রক্রিয়ায় ঘটে, এ শিখন । শব্দের অর্থ ও বানান শিখন
প্রক্রিয়ায় এটি অনন্য এক পদ্ধতি। শিখন পরিস্থিতি নির্বিশেষে জ্ঞান কাঠামো এতে
স্থায়িত্ব লাভ করে।
১০. কন্সস্ট্রাক্টিভিজম বা বাস্তবতার আলোকে শিখন: এটা এমন শিখন তত্ত্ব
যাতে কোন অভিজ্ঞতা মধ্য দিয়ে ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটানোর মাধ্যমে নিজস্ব
বোধগম্যতা এবং বৈশ্বিক জ্ঞান; শিক্ষার্থীদের শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া।
১১. ডিফরেন্টিশিয়েশন বা বিভিন্নতার মাধ্যমে শিখন: এটা কোন শিখন-শেখানো
কৌশল নয়, বরং শিখন সম্পর্কিত ভাবনা। প্রায়োগিক প্রেক্ষাপটে এটা ছাত্র/ছাত্রীদের
প্রস্তুতি, আগ্রহ বা শিখন চিত্র অনুসারে বিষয়বস্তু, প্রক্রিয়া, বা শিখন ফল-এর
সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
১২. ডিজিটাল সিটিজেনশিপ বা তথ্য-প্রযুক্তিগত জ্ঞানসমৃদ্ধ সুনাগরিকতা: এটা
অন-লাইনে শিখন-শেখানোর জগতে কাজ করা বা শিখনের সক্ষমতাকে বুঝায়। ডিজিটাল বিষয়বস্তু
এবং সমাজের ইকোলজি বা বাস্তুকলাকে প্রভাবিত করে এমন অভ্যাস, কাজ ও ব্যবহার প্রকিয়া
হলো, ডিজিটাল সিটিজেনশিপ।
১৩. ই-লার্নিং: অন-লাইন কোর্স এবং ডিজিটাল বিষয়সম্বলিত জিনিষগুলো ব্যবহার
করে প্রকাশ্যে শিখন প্রক্রিয়াই হলো, ই-লার্ণিং।
১৪. ফিলিপ্ড ক্লাশরুম বা বাড়িতে শ্রেণিকক্ষের মত করে শিখন: এ পদ্ধতি
ছাত্র/ছাত্রীদের গৃহে অডিও, ভিডিও প্রভৃতি ব্যবহার করে শিখন এবং তা শিক্ষকের
সহায়তায় বিদ্যালয়ে অনুশীলণ করে এমন প্রক্রিয়াকে ফিলিপ্ড শ্রেণিকক্ষ বলা হয়্। এটা
সনাতনত পদ্ধতির ঠিক উল্টো একটা প্রক্রিয়া, যেখানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে
বিষযবস্তুর সাথে পরিচয় ঘটানো হয় এবং কোন শিক্ষকের তত্ত্বাবধান ছাড়াই বাড়িতে শিখন
অনুশীলণ করানো হয়।
১৫. ফ্লো বা সমন্বিত শিখন: এটা এমন এক প্রক্রিয়া যা পাশ্চাত্যে এককালে
অনুসৃত হতো এবং পুণরায় প্রচলন ঘটানো হয়েছে।আর এতে কাজ ও কর্মসম্পাদনকারী একাত্ব
হয়ে পড়ে এবং শারীরিক, মানসিক এবং কাজ; স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক হয়ে যায় ও উন্নত ফলাফল
বয়ে আনে এবং বিশেষ সন্তুষ্টির জন্ম দেয়।
১৬. খেলা-ধুলা ভিত্তিক শিখন: শারীরিক ও ডিজিটাল খেলা-ধুলার মাধ্যমে এ শিখন
প্রক্রিয়া চলে।
১৭. গেমিফিকেশন বা কোন শিখন বিষয়কে খেলায় পরিণত করে শিখন: খেলানার বিষয়
নয়, অথচ শিখন-শেখানোর বিষয়বস্তু, এমন কোন জিনিষকে খেলানায় পরিণত করে শেখাই হলো,
গেমিফিকেশন।
১৮. জিনিয়াস আওয়ার বা মেধার সাহোয়্যে শিখন সময়কাল: আত্নকেন্দ্রিক বা নিজে
নিজে শেখার জন্য সহায়ক হয়, এরকম একটি আনুষ্ঠানিক শিখন পরিবেশ সৃস্টি করে শিখনের
সুনির্দিষ্ট সময়কাল নির্ধারণ প্রক্রিয়া হলো জিনিয়াস আওয়ার।
১৯. শিক্ষার জন্য গোগ্লস এপ্স পদ্ধতি মাধ্যমে শিখন: কোন বিদ্যালয় বা
শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার উপযোগি কৌশলের বা সফট্ওয়্যারের সমষ্টি বিশেষ এটি, যা
ইন্টারনেট অনুস্ন্ধান যন্ত্র গোগল চালু করেছে। গোগল ড্রাইভ, গোগ্ল ডকস, জি-মেইল
এবং অন্যান্য প্রাগ্রাম, যা শিক্ষার্থীদের শিখন-শেখানো কাজে খুবই সহায়তা করে থাকে।
২০. গোগল ক্লাশরুম: শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক অনেক ডকুমেন্ট গোগল
কর্তৃপক্ষ তৈরি করে রেখেছে, যা যে কোন সময় ওয়েভসাইটে পাওয়া যায়।আর শিখন-শেখানো
কাজে যেভাবে ও প্রয়েজনানুযায়ি যে কোন সময় ব্যবহার করা যায়।শুধূ প্রয়োজনটা কম্পিউটার
টুলবারে লিখে ক্লিক করলেই সমাধান পাওয়া যায়।
২১. হিউটাগগি বা নিজে নিজে শিখন: এটাও শিক্ষার্থীদের নিজে নিজে শেখার একটি
পদ্ধতি। এ পদ্ধতি কোন আনুষ্ঠানিক কিছু নয়, যা স্থানীয় এলাকাবসীর মাঝে মিশে গিয়ে,
শিক্ষার্থীরা শিখন ফল অর্জন করে। এটা জবাবদিহিমূলক, নতুন জ্ঞান অর্জনমূলক এবং
মানবিক শিখন পদ্ধতি।
২২. ইন্ডিভিজুয়েলাইজড বা ব্যক্তিগতভাবে শিখন: সার্বজনীন কোন বিষয়কে
ব্যাক্তিগতভাবে গ্রহন করে শিখনই হলো, উনিভিজুয়েলাইজেশন।
২৩. অনানুষ্ঠানিক শিখন: এটা এমন এক পদ্ধতি, যাতে বোধগম্যতা, জ্ঞান বা
দক্ষতার অনুসন্ধানকে সমৃক্ত করে কোন শিখন পরিচারলনা করা হয়, যাতে শিক্ষাক্রম
দৃশ্যত প্রযোজ্য হয় না। এটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা যে কোন ধরণের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া
শিখন-শেখানোর একটি প্রক্রিয়া।ব্যক্তি বা দল বিশেষ এটা বেছে নেয় নিজেদের প্রয়োজনে।
২৪. লার্ণিং নিম্যুলেশন বা প্রযুক্তির ব্যবহারে স্ব-শিখন: এটা এমন এক শিখন
পদ্ধতি যাতে, সদা প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে, যাতে শিক্ষার্থীকে কৗশল প্রয়োগ, সূক্ষ
কৌশল অনুসরণ এবং দক্ষতার সাহায়্যে নিরীক্ষা চালাতে হয়, খেলাধুলা করা বা অন্য কোন পন্থা
অবলম্বন করতে প্রাসঙ্গিকতার প্রাধান্য থাকবে।
২৫. নাটকের মাধ্যমে শিখন: নাটকের বা অভিনয়ের মাধ্যমে জ্ঞান, দক্ষতা বা
বোধগম্যতাকে ধারণাগত রূপ দান করাই হলো, এ ধরণের শিখন। দৃশ্যমানভাবে নাটকের অভিনয় ও
কার্যক্রম দেখে একটি সময় ও স্থান ব্যাহার করে শিক্ষার্থীদৈর অন্তর্জগতে শিখনকে
পুতিত করে দেয় এ পদ্ধতির শিখন।
২৬. লার্ণিং টেক্সোনমি বা তাত্ত্বিক শিখন: শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকগণ নতুন
নতুন শিখন তত্ত্বগুলোর ধারণা লাভ করবেন এবং প্রয়োগ করবেন। শিখন-শেখানো পরিকল্পনা
তৈরি, পাঠ্য বিষয়, মূল্যায়ন এবং অন্যান্য শিক্ষণ ও শেখানোতে, এ তত্ত্বগুলো প্রয়োগ
করা যায়।
২৭. মাস্টারি লার্ণিং বা শিখন দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার মাধ্যমে শিখন: এটা এমন
এক পদ্ধতি, যাতে শিক্ষার্থীদের শিখনে ফিডব্যাক বা শিখন দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠতে সহায়ক
হয় এবং কার্যকর শিখন হয়।এভাবে শিক্ষার্থীরা, এক একটি অধ্যায় পার হয় প্রত্যেক
ক্ষেত্রে পটু হয়ে।
২৮. মূক বা মেসিভ অপেন অনলাইন শিখন: সরাসরি অন-লাইন নির্ভর শিখন প্রচেস্টা
হলো, এ ধরনের শিখন। বিষয়বস্তুতে অন-লাইনে প্রবেশ করে শিখন-শেখানোর প্রক্রিয়া এটি।
২৯. মোবাইল লার্ণিং: মোবাইলে রাখা বিভিন্ন সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে শিখন
প্রক্রিয়া হলো, মোবাইল লার্ণিং। শুধু মোবাইল ব্যবহার করে বা অন্য প্রযুক্তির সাথে
সংযুক্ত করে বিভিন্ন কৌশলে শিখন-শেখানোর প্রক্রিয়া এটি।
৩০.মডেল-বেইজড লার্ণিং বা মডেল ব্যবহা করে শিখন: বর্তমানে প্রচলিত কোন
মডেল বা আদর্শস্থানীয় বিশেষ নমুনা ব্যবহার করে নতুন বিষয় শেখা ও মডেল তৈরি করার
মাধ্যমে শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া হলো, মডেল-বেইজড লার্ণিং।
৩১. পার্সোনালাইজড লার্ণিং বা ব্যক্তিগত শিখন: শিক্ষার্থী বিশেষে
ব্যাক্তিগতভাবে শিখন পদ্ধতি এটি। বিষয়বস্তু, শিখন মডেল, মূল্যায়ন ছক, ও প্রয়োগিক
জ্ঞান ব্যবহারসহ শিক্ষার্থী এধরণের শিখন প্রকিয়া চালাবে। পার্নালাইজড শিখন কোন
শিক্ষার্থী যে কোন শিখন অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করতে পারে, যা হবে স্ব-উদ্যোগে এবং
শিখন ফল অর্জন, আত্নকেন্দ্রিক প্রচেস্টায় পরিচালিত হবে।
৩২. প্লেইজ-বেইজড শিখন বা স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ি শিখন: স্থানীয় ঐতিহ্য,
সংস্কৃতি, ভূ-প্রকৃতি, সুযোগ-সুবিধা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবং এগুলোকে
ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করে ভাষা, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান এবং শিক্ষাক্রম
অনুসারে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসী মাঝে সেবামূলক প্রকল্প তৈরি করে
অন্যান্য বিষয়ে শিখবে।
৩৩. প্লে বা নাটক প্রদর্শনমূলক শিখন: নাটককে বিনোদনমূলক ও শিখন-শেখানোর
মাধ্যম হিসেবে বব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা শিখবে। সাহসিকতা ও আনন্দদায়ক পরিবেশ
সৃস্টির মাধ্যমে এ শিখন চলবে। নাটকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক, নৈতিক,
কৌশলী, শারীরিক শৈলী, অথবা সৃজনশীলতার সামর্থ্য অর্জনে সক্ষম হবে।
৩৪. প্রবলেম বেইজড বা সমস্যা-ভিত্তিক শিখন: এটা অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়
মোকাবেলা করে শিখনের মত। প্রবলেম-বেইজড শিখন হলো একটি শিখন কাঠামো; যাকে
আদর্শিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য ও অত্যন্ত ব্যক্তিগত সমস্যাকে ব্যবহার করে শিখন
অভিজ্ঞতাকে কাঠামোগত রূপদান, সমস্যা-ভিত্তিক শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া।
৩৫. প্রজেক্ট-বেইজড লার্ণিং বা প্রজেক্ট পদ্ধতিতে শিখন: গভীর বা ব্যাপক
কোন বিষয়ে সময় নিয়ে দলীয়ভাবে কোন বিষয়ে শিখন প্রচষ্টা হলো প্রজেক্ট-বেইজড শিখন।
সমস্যা-ভিত্তিক নতুন জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সহযোগিতায় শিখন
কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এসব কাজ হবে, গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি করা, অর্থবহ
কাজকে কাঠামো রূপ দান, জ্ঞানগত বিকাশ ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি; উভয় ধরণের
প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার্থীদেরকে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যত্নসহকারে মূল্যায়ন করা হবে।
৩৬. কোয়েশ্চন-বেইজড লার্ণিং বা প্রশ্নকরণের মাধ্যমে শিখন: এটা এমন এক শিখন
কৌশল যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের তথ্য সংগ্রহ এবং জবাব খোঁজার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে
প্রশ্ন তৈরি, পুণর্বিন্যাস এবং উন্নত প্রশ্ন করার পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে।
৩৭.
সিনারিও-বেইজড লার্ণিং বা দৃশ্য ইত্যাদির
মাধ্যমে শিখন: এটা শিখন মাধ্যম, যা সামাজিক সিমুলেশন হিসেবে কাজ করে, সমস্যা
সমাধানে শিক্ষার্থীরা বিশ্বাসযোগ্য প্রসঙ্গ ব্যবহার করে শিখে। এটাও অনেকটা সমস্যা
সমাধানমূলক পদ্ধতি, কিন্তু দৃশ্য ইত্যাদি ব্যবহারে সমস্যা থাকে না। এতে
আন্ত:ক্রিয়ামূলক শিখন দৃশ্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।এটি সাধারণত ছাত্র/ছাত্রীদেরকে
পল্পচ্ছলে, দুর্বল কাঠামো বা জটিল সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে যা তাদের সমাধান করা
প্রয়োজন এমন এক ধরণের শিখন প্রক্রিয়া। এত শিক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন