শিক্ষা গ্রহনে কিছু মনিষীর
অনুপ্রেরণাদায়ক উক্তি
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার
মহেশখালী, কক্সবাজার।
মহান সব মনিষী শিক্ষাকে উৎসাহিত করেছেন। এখানে অতীত ও
বর্তমানের ৫ জন জন মনিষীর উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হলো, যা হতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই
অনুপ্রেরণা পাবেন।
১.গ্রিক দার্শনিক
এরিস্টটল বলেছেন, “হৃদয়ে শিক্ষাকে ধারণ না করে মনকে শিক্ষাদানে আদৌ শিক্ষা
গ্রহণ হবে না।” আজকের যুগের শিক্ষার্থীরা উন্নত বিশ্বের হলেও, এরিস্টটলের কথাগুলো
এখনও সত্য।হতে পারে তারা ধারাবাহিকভাবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ
শিক্ষাস্তরগুলো পার হয়ে যায়, কিন্তু কোন বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করার মাধ্যমে হৃদয়ঙ্গম
করা একটি খুবই কঠিন ব্যাপার।কোন শিক্ষার্থী সনদ পেতে সত্যিকারভাবে প্রচেস্টা
চালিয়ে গেলে, তা পাওয়া যাবে।
২.ফরাসী চিত্রকর পল
সিজেন বলেন, “ শিক্ষা শূধূ দেখা এবং কপি করার বিষয় নয়, এটা অনুভব করারও বিষয়।”
পল সিজেনের কথাগুলো মনে হতে পারে শুধু চিত্র শিল্পীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, আসলে
তা সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। শিক্ষা গ্রহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক
হলো, তথ্য ও বিষয়বস্তুকে বিশ্লেষণ করে শিখন প্রচেষ্টা চালানো। বিশ্লেষণ করার
ক্ষমতা শিক্ষার্থীর চারিপাশের জটিল সব বিষয় ধারণ করার ক্ষেত্রে দক্ষ করে তোলে।পল
সিজেন; কোন চিত্র আঁকার পূর্বে তার চারিপাশের পরিবেশ এবং বিষয়গুলোকে বিশ্লেষণ করে
দেখতেন। তারপর তিনি সে চিত্রে যত্নসহকারে রং-তুলির আঁচড় লাগাতেন, শুধু রং-তুলি
ব্যবহার করে ছবি আঁকতেন না।
৩.মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ক্রীড়াবিদ উইলমা রোডলফ বলেন, “ বড় কিছুকে জয় করা, মহান
কিছু করা। কিন্তু জীবনে কেহ যদি সত্যিকারের কিছু করতে চায়, তবে তাকে হারতে শিখতে
হবে। কেহ এমন হন না যে, সদা অপরাজিত থাকেন।কেহ যদি চরম পরাজয় হতে শিক্ষা নিয়ে আবার
জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চায়, জয় একদিন হবেই।” অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয়ী উইলমা
রোডলফ-এর ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার জন্য দেয়া উপদেশটি শুধু ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
নয়। শিক্ষাস্তরের যে কোন পর্যায়ে কোন শিক্ষার্থী একাধিকবার খারাপ করতে পারে বা কম
নম্বর পেতে পারে। জীবনে কেহ অনেক ভুল করতে পারে। সকল ব্যর্থতা বা ভুলকে অতিক্রম
করে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা এবং সাফল্য অর্জনে অবিচল থাকাই গুরুত্বপূর্ণ।
৪.মার্শাল আর্ট শিল্পী
এবং মারদায্গা সিনেমার ছবির নায়ক ব্রুস লী বলেন, “একজন বুদ্ধিমান মানুষ বোকা
বোকা প্রশ্ন করে অনেক বেশি শিখতে পারে, একজন বোকা মানুষ, বুদ্ধিমান উত্তর
প্রদানকারি ব্যক্তির চেয়য়ে উত্তম।”-আমরা সবাই জানি যে, ‘বোকার কোন শত্রু নেই।”
বিখ্যাত এই মার্শাল আর্ট শিল্পী ও অভিনেতা ব্রুস লীর, কথাটির মর্মার্থ ধারণ করেই
এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। কোন কিছু জানার জন্য কখনও ইতস্তত হওয়া চলবে না। কাজেই
কখনও কোন প্রশ্নের উত্তর পেলে, কোন শিক্ষার্থীকে ভেবে নিতে হবে সত্যিকারভাবে এর কী
অর্থ করা হয়েছে। চারিপাশের বিশ্বভ্রম্মান্ডে যা কিছু আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করে জেনে
নেয়াই উত্তম, এটা একটি শিখন পদ্ধতি।
৫. বর্তমান মার্কিন
ফার্স্ট লেডি, আইনজীবী ও লেখিকা মিচেল ওবামা বলেন, “ আমরা সততা এবং
সত্যনিষ্ঠতার কথা জানি…..সত্যনিষ্ঠতা বিশাল একটি ব্যাপার….অর্থাৎ কোন সহজ পথ
অবলম্বন বা স্ব-সৃষ্ট পন্থা অনুসরণ করা যাবে না….এবং এতে সাফল্য কখনও স্থায়ী হবে
না…..যদি না তা ন্যায়নিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠার মাধ্যমে হয়ে থাকে।” কোন শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণকাল কোন শিক্ষার্থীর জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মুহুর্ত এবং
কঠিনতম সময়। হতে পারে, শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে শিখন-শেখানোতে ডুবে আছে অথবা
পরীক্ষা প্রস্তুতি বা বড় কোন কাজ সম্পাদনের কাজে নিয়োজিত আছে। তবে মনে রাখতে হবে
যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোন পার্কে বেড়ানোর জায়গা নয়। শিক্ষা গ্রহণের জটিল সব কাজের
মধ্যে ব্যস্ত থেকে নিত্যই আগ্রহী বা উদ্ধিপ্ত থাকা অসম্ভব ব্যাপার। মাঝে মাঝে
বিনোদন, বিশ্রাম ও অন্য কোন অনুপ্রেরণার উৎস খুঁজে নিতে হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন